রক্ষিত বনের দেড় কোটি ঘনফুট পাহাড় ধ্বংস

পরিবেশ অধিদপ্তরের নোটিশ পাত্তা দিলনা পাহাড়খেকোরা!

fec-image

কক্সবাজারের পিএমখালীতে রক্ষিত বনের দেড় কোটি ঘনফুট পাহাড় কাটার অভিযোগে ১৩ মামলার আসামি পাহাড়খেকো ওবায়দুল করিম ও রুনোকে হাজির হতে নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল।

গত ৩১ আগস্ট এনফোর্সমেন্ট মামলা নং ৩৩৯/২০২২ মূলে গত ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম অঞ্চল কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল কার্যালয়ের পরিচালক মুফিদুল আলম। কিন্তু ধার্য তারিখে ওবায়দুল করিম ও নাছির উদ্দীন রুনো নামের ওই দুই পাহাড়খেকো হাজির হননি বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম জানান, তারা ধার্য তারিখে হাজির হননি। পরবর্তী ধার্য তারিখে আবারও নোটিশ দেয়া হবে।

এদিকে, গত ১০ বছর ধরে সিন্ডিকেট করে পিএমখালীতে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে চিহ্নিত পাহাড়খেকো ওবায়দুল করিম। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বন বিভাগ ৯ টি এবং পরিবেশ অধিদপ্তর ৪টি মামলা করে। কিন্তু এরপরও পাহাড় কাটা অব্যাহত রাখে সিন্ডিকেটটি।

সর্বশেষ কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলার ঘোনারপাড়া (তেইল্ল্যাকাটা) এলাকায় রক্ষিত বনভূমিতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬/৭ মাসে আনুমানিক ১০ একরের ৫/৬টি পাহাড় কেটে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট বালি বিক্রি করে।

এ বিষয়ে দুই ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ঘটনায় দেড় কোটি ঘনফুট পাহাড় কাটার অভিযোগে গত ৩১ আগস্ট ওবায়দুল করিম ও নাছির উদ্দীন রুনোর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল।

নোটিশে গত ৯ সেপ্টেম্বর হাজির হতে বলা হলেও তারা হাজির হননি। জানতে চাইলে ওবায়দুল করিম নোটিশ পাননি বলে দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়ায় এনফোর্সমেন্ট এর সুপারিশ পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বিজ্ঞ আদালতেও দাখিল করা হয়েছে।’

পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহাড় কেটে বালি পাচারের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। সেখানে আনুমানিক ২০ হাজার গাছ কাটা পড়েছে। আনুমানিক ১০ একর আয়তনে ৫/৬টি পাহাড় কেটে প্রায় ২ কোটি ঘনফুট বালি পাচার করা হয়েছে। যার মূল্য ৫ কোটি টাকার বেশি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হলে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিক বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, পাহাড় ধ্বস, বন রক্ষা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন