পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জরিমানা আরোপকৃত বালুর নিলাম, সচেতন মহলের উদ্বেগ

fec-image

লামা উপজেলার সরই ও আজিজনগর ইউনিয়নে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ১৬ লক্ষাধিক ঘনফুট বালু নিলাম প্রদানের সিদ্ধান্তে পরিবেশ সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবেশ সচেতন মহলের মতে অবৈধভাবে বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট নিলামে এই বালু ক্রয় করে দীর্ঘ মেয়াদী সময়ে অবৈধভাবে বালু পাচারের সুযোগ লাভ করবে।

জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর গত বছর সরই ও আজিজনগর ইউনিয়নের কয়কটি স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ২০ লক্ষাধিক ঘনফুট বালু উত্তোলনের দায়ে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটকে জরিমানা করে। এই সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে সরই ও আজিজনগর ইউনিয়ন হতে অবৈধভাবে বালু পাচার করে আসছে। পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জরিমানা আরোপকৃত বালু পাচার করার জন্য এই সিন্ডিকেট গত এক বছর ধরে তদবির করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বালু ব্যবসায়ী নুরুল হক মুঠোফোনে পার্বত্যনিউজের এই প্রতিবেদককে জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে তাকেসহ বেশ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ীকে জরিমানা আরোপ করেছে। জরিমানা পরিশোধের পর বালু পরিবহনের ও বাজারজাত করার অনুমোদন চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর এই আবেদন নাকচ করে দেয়।

নুরুল হক আরও জানায়, গত এক বছর ধরে এই বালুগুলো নিয়ে যাবার জন্য তারা তদবির চালিয়ে আসছেন। তার মতে নিলামে হলে ও বালুগুলো নিতে পারলে তাদের বিনিয়োগ উঠে আসবে এবং প্রশাসনিক একটা অনুমোদন মিলবে।

বালু ব্যবসায়ী সেলিম জানান, এই বালুগুলো যাতে করে নিয়ে যেতে পারে সেই জন্য বালু ব্যবসায়ীরা চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

মানবাধিকার ফাউন্ডেশন বান্দরবান জেলা সেক্রেটারি এম রুহুল আমিন জানায়, অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুগুলো নিলাম দিলে সাধারণ দৃষ্টিতে সরকার রাজস্ব পাবে কিন্তু এতে করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে বালু পাচার করবে। কাউকে পাত্তা দিবে না।

পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান জেলার সহকারী পরিচালক ফখরুদ্দিন জানায়, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় সকল মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

বালু নিলামের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর এই ব্যাপারে কিছুই জানে না। তবে এই বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করায় জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, রাজস্ব আদায়ের দোহাই দিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিলে তারা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করবে।

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ও পাচারকারীদের নামে পরিবেশ অধিদপ্তর জরিমানা আরোপ করেছে। অথচ লামা ভূমি অফিসের একাধিক তদন্তে একই বালু কে বা কারা স্তুপ করেছে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিষয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের রক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানান, বালু নিলাম গ্রহীতাদের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। আবার সরকার রাজস্ব পাবে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৭ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জরিমানা আরোপকৃত এই ১৬ লক্ষাধিক ঘনফুট বালু নিলামে বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন