parbattanews

পর্যটন ও মাদক

বাংলাদেশে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন মানুষ মাদকাসক্ত। দেশের বেকার জনসংখ্যারও বেশ বড় অংশ মাদকাসক্ত। মোট মাদকাসক্তদের ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত এবং ৪০ শতাংশ অশিক্ষিত। মাদকাসক্তদের প্রায় ৫৭ শতাংশ যৌন অপরাধী, যাদের ৭ শতাংশ হলো এইচআইভি ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত। সারা দেশে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মাদক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন, যাদের মধ্যে ২৭ হাজার ৩০০ জন মহিলা (কালের কন্ঠ, ২৯ মে ২০২১, লেখক সাবেক র‍্যাব কর্মকর্তা)।

কক্সবাজারে এই বছরে (জানুয়ারি থেকে মে) ১৫৬টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ময়নাতদন্ত করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। যাদের মধ্যে প্রায় ৪০টি মৃত্যু বিষ, মাদক বা এ জাতীয় সাবস্ট্যান্স এব ইউজের কারণে হয়েছে বলে সন্দেহ করেন, সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক, ডা. আশিকুর রহমান। আর এই ৪০ জনের বড় একটা অংশ কক্সবাজারে আসা পর্যটক।

“Medical Emergency among the Tourists Travelling in Cox’s Bazar ” এই শিরোনামে একটি গবেষণার প্রাথমিক ডাটায় দেখা যায়, পর্যটকদের অধিকাংশই বিষ, মাদক বা এজাতীয় দ্রব্য ব্যবহ্নত হয়েছে।

তাই পর্যটন শিল্পের অগ্রযাত্রাকে স্বাস্থ্যসম্মত করতে ও বিশ্বমানের পর্যটন শিল্প করতে কয়েকটি বিষয়ের উপর নজরদারী বাড়ানো জরুরি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ যার মধ্যে অন্যতম।

আর এই নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েকটি সাধারণ পরামর্শ

উৎস বন্ধ:

১. হেলদি সিটি খ্যাত কক্সবাজারে যাতে কোন অবস্থায় পর্যটক গণ মাদকদ্রব্য ক্রয় করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

২. প্রয়োজনে পর্যটন এলাকায় প্রবেশের পূর্বে চেক করার ব্যবস্থা করা।

৩. সন্দেহ হলে ডোপ টেস্ট করে যদি পজিটিভ হয়, তাদের কক্সবাজারে আসার অনুমতি না দেওয়া।

ব্যবহার বন্ধ:

১.কোন অবস্থায় হোটেল কক্ষে এ মাদক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করতে না দেওয়া, যে হোটেলে এ রকম ব্যবহার হয় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।

২. সরকার অনুমোদিত বার ছাড়া অন্য কোন স্থানে কোন ভাবেই যাতে এ জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

৩. অনুমোদিত বারে বা হোটেলে যথাযথ মেডিকেল টিম নিশ্চিত করা।

চিকিৎসা:

১. চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কী মাদক বা বিষ ব্যবহার করা হয়েছে তা খুঁজে পাওয়া। যাতে যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারেন,
এজন্য BSTI, মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এ সব দ্রব্যের রক্তে উপস্থিতি দ্রুত সময়ে টেস্ট করা যায় তার ব্যবস্থা করা।

২. সকল প্রকার এ জাতীয় দ্রব্যের এন্টিডট কক্সবাজারে নিশ্চিত করা। তাতেই কক্সবাজারে অনেক পর্যটকের প্রাণ রক্ষা পাওয়া যাবে।

সর্বোপরি সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। কক্সবাজারে ভ্রমণ আরো আনন্দদায়ক হোক, এই প্রত্যাশা।

Exit mobile version