পর্যটন মৌসুম শুরু: দ্রুত চলাচল করবে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ

fec-image

এ মাস থেকেই মূলত শুরু পর্যটন মৌসুম। এই সময়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি বেড়াতে পছন্দ করে। কেননা, ওই সময়ে আবহাওয়া থাকে অনুকূলে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চাপ থাকে কম। ফলে ওই সময়ই দেশে পর্যটন শিল্প চাঙা থাকে।

পর্যটনের মৌসুম শুরু হচ্ছে অচিরেই। ফলে পর্যটকদের আকর্ষণের প্রস্তুতি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। অক্টোবর থেকেই শুরু হবে পর্যটন মৌসুম। চলবে মার্চ পর্যন্ত। এর মধ্যে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে ভর মৌসুম। এই সময়ে পর্যটন বাণিজ্য চাঙা করতে দেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কুয়াকাটা, সিলেট, সুন্দরবন-এসব অঞ্চলের হোটেল-মোটেল, পরিবহন ও মার্কেটগুলো আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এর মধ্যে হোটেলের সাজসজ্জা বাড়ানো, মার্কেটগুলোতে বিপুল পণ্যের সমাহার ঘটানো হয়েছে। পর্যটকদের ঘিরে ওইসব অঞ্চলে একদিকে যেমন টাকার প্রবাহ বাড়ে, অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যও চাঙা হয়।

শুধু পর্যটন শিল্পকে ঘিরেই বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। একে আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজারে পর্যটকদের সুবিধা আরও বাড়ানো হচ্ছে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বান্দরবানের থানচি থেকে রেমাক্রি পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। সাজেকের আয়তন আরও বাড়ানো হচ্ছে। টেকনাফের জালিয়ার দ্বীপে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল হচ্ছে। সোনাদিয়ায় পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়া দেশের পর্যটন স্থানগুলোতে যোগাযোগ ও থাকা-খাওয়ার অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে।

পর্যটকদের বেড়ানোর অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান সেন্টমার্টিন দ্বীপ। কয়েকদিনের মধ্যে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে ২৫ অক্টোবর থেকে পহেলা নভেম্বর এর ভেতরে জাহাজ চলাচল করবে বলে একটি সুত্রে জানা গেছে। এই জাহাজ চলাচল চলে মার্চ পর্যন্ত। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে। এ কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেসব পর্যটক যেতে আগ্রহী তারা ওই সময়টিতেই যান। এ কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপের হোটেল-মোটেল ও মার্টিনগুলো পর্যটক বরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে এখন অনেক পর্যটক যাচ্ছেন। ফলে এসব দ্বীপেও অবকাঠামোগ সুবিধা বাড়ছে। পাশের কুতুবদিয়া দ্বীপেও পর্যটক যাচ্ছেন। এগুলোতে আগে থাকার হোটেলের সুবিধা না থাকলেও এখন গড়ে উঠছে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের পর্যটন শিল্পে এখন মন্দাভাব গেলেও আগামী মাস থেকেই তা চাঙা হয়ে উঠবে বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সিলেটের জাফলং, লালা খাল, খাসিয়াপুঞ্জি, রাতারগুল, লোভাছড়া, পানতুমাই, বিছনাকান্দি ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর এলাকা, চা বাগান, কমলার বাগান ও মনিপুরী পাড়া পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া সিলেজুুড়ে রয়েছে পাহাড়ি ছড়া আর ঝরনা। আসন্ন মৌসুমকে সামনে রেখে এগুলো চাঙা হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। নগরের জিন্দাবাজার এলাকার হোটেল গোল্ডেন সিটির ব্যবস্থাপক মৃদুল কান্তি দত্ত জানান, আসন্ন মৌসুমে ভালো ব্যবসা হবে বলে আশায় আছেন। ভেলি গার্ডেন হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলার আহমদ বলেন, শীতেই বেশি পর্যটক আসে সিলেটে। এবার আসবে বলে আশা করি।

পার্বত্য অঞ্চল রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে এখন অনেক পর্যটক যাচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছেন বান্দরবানে। বান্দরবান শহর থেকে বেশ দূরে থানচি হয়ে নাফাখুম, ভেলাখুম, আমিয়াখুম ঝরনা এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। ওইসব অঞ্চলে পর্যটকদের আগমন বাড়ায় এখন দুর্গম অঞ্চলেও অবকাঠামোগত সুবিধা গড়ে উঠছে। এককভাবে এখন সবচেয়ে বেশি পর্যটক যাচ্ছেন রাঙ্গামাটির সাজেকে।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো: জিল্লুর রহমান বলেন-দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত আমাদের জাতীয় সম্পদ। নিরাপত্তার কারণেই এখানে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। এবারো সৈকত এলাকায় পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তিনি নির্ভয়ে পর্যটকদের কক্সবাজার ভ্রমণের আহবান জানান।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটন মৌসুমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি কক্সবাজার থেকে মাদকের বদনাম ঘুচাতে মাদকের ছড়াছড়ি রোধেও নজর রাখা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন