parbattanews

পাকিস্তানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল

সংবিধানের পরোয়া না করে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে যে রায় দিয়েছিল দেশটির নিম্ন আদালত, তা বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্ট।

বুধবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজি ফায়েজ ইসার নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের একটি বেঞ্চ এক রায়ে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, বিরল রোগ অ্যামিলয়ডোসিসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ভোগার পর ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের আমেরিকান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন জেনারেল মোশাররফ।

১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হওয়ার পরের বছর অভুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে উৎখাত করে জাতীয় ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল পারভেজ মোশররফ। পরে ২০০২ সালে গণভোটের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট হন।

তার শাসনামলের গোটা সময়ে পাকিস্তানের রাজনীতি অস্থিতিশীল ছিল। এর মধ্যেই দেশটির বিচার বিভাগের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ২০০৭ সালের নভেম্বরে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন জেনারেল মোশাররফ।

তবে তাতে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বেড়ে যাওয়ায় ২০০৮ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মোশাররফ। তারপর ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য দুবাই যান। সেখান থেকে আর ফেরেননি তিনি।

এদিকে জেনারেল মোশাররফ ক্ষমতা ছাড়ার পর তার বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা (হাই ট্রেজন কেইস) হয় পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালতে। নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ছিল মামলাটির বাদি।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, পাকিস্তানের সংবিধানের ৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘণ করে ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন তিনি। বিচার প্রক্রিয়া শেষে মোশাররফের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয় এবং ২০১৯ সালের ১৭ মার্চ পাকিস্তানের সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

তবে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি সেই রায়কে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেন লাহোর হাই কোর্ট (এলএইচসি)।

লাহোর হাই কোর্টের এই রায়ের পর তা বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে পাকিস্তানের আইনজীবীদের শীর্ষ সংস্থা পাকিস্তান বার কাউন্সিল। শনিবার সেই আপিলেরই রায় ঘোষণা করলেন সুপ্রিম কোর্ট।

রায় ঘোষণার সময় বিচারপতিদের বেঞ্চ অভিযোগ করেন, বিচার কার্যক্রম চলাকালে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য মোশাররফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বহুবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল— কিন্তু তার কেউ সেই নোটিশকে আমলে নেন নি।

এই অভিযোগের জবাবে মোশাররফের আইনজীবী সালমান সাফদার বলেন, তিনি নিজেও এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার মোশাররফের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু তার পরিবারের কোনো সদস্য সাড়া দেননি।

Exit mobile version