parbattanews

পানছড়িতে থানকুনি পাতায় বাড়তি আয়

কৃষক কল্যাণ মিত্র

পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন জঙ্গল, নদীর পাড় ও ক্ষেতের পাশে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় থানকুনি পাতা। পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা এসব থানকুনি সংগ্রহ করে উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক বাজারে এনে বিক্রি করে থাকে।

থানকুনি পাতা পাহাড়ে একেক সম্প্রদায়ের কাছে একেক নামে পরিচিত। বাঙালিরা থানকুনি, আদামুনি, চাকমারা মিলগুনি, ত্রিপুরারা সমসুতা বা সাকুমো বাখালা ও মারমারা ম্রাংখোওয়া নামেই এটাকে চিনে।

সকল সম্প্রদায়ের কাছে এটা ঔষধি খাবার হিসেবেই বেশ পরিচিত। তবে এক কৃষকের জমিতে বেগুন-কচুর ফাঁকে প্রাকৃতিক থানকুনি পাতা বদলে দিয়েছে তার ভাগ্যর চাকা। তাতেই মহাখুশি কৃষক।

সাত শতক জমিতে বেগুন ও কচুর পাশাপাশি বিগত চার বছর ধরেই থানকুনি পাতা বিক্রি করে পাচ্ছে বাড়তি আয়। মাসে থানকুনি পাতা বিক্রি করে আয় তিন হাজার টাকারও বেশী যা কোন ধরণের পূঁজি ছাড়াই।

কৃষক কল্যাণ মিত্র চাকমা পানছড়ি সদর ইউপির অবনীপাড়ার নিরঞ্জন চাকমার সন্তান। তার কচু ও বেগুন ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ রঙের থানকুনি সেজে রয়েছে অপরুপ সাজে।

কল্যাণ মিত্র জানায়, মাসে কমপক্ষে দু থেকে তিনবার তুলতে পারি। তোলার পর পরই জমিনে পানি দিতে হয়। খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর, রাঙামাটি থেকে অগ্রিম অর্ডার করে নিতে আসে বেপারিরা। নিজের কোন জমিজমা নেই। তবে বিশ শতক জমি বন্ধক ও ৮০ শতক বর্গা নিয়ে নিজেই শ্রম দিয়ে সংসারে বিদ্যালয় পড়ুয়া এক সন্তান নিয়ে ভালোই দিন যাপন করছে।

পানছড়ির উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা জানান, স্যাঁতস্যাঁতে মাটি, দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি থানকুনি চাষের জন্য উপযোগী। এটাতে জৈব সার প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক মৌসুমে এতে সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। বীজ আর ডগার মাধ্যমেই ইহার বংশবিস্তার হয়।

বর্তমানে টবেও কেউ কেউ থানকুনি চাষ করে। কৃষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে পান এবং বিলাতি ধনে পাতার মতো থানকুনিও এখানকার একটি অর্থকরী ফসল হতে পারে।

তিনি আরো জানান, থানকুনি মুলত একটি ঔষধি লতাজাতীয় উদ্ভিদ। ইহা কুষ্ঠ, চর্ম, কাশি, হজম বৃদ্ধি, পেট ব্যাথা, আমাশয়, মুখে ঘা, কিডনী যন্ত্রনা ইত্যাদি রোগের জন্য খুবই উপকারী।

Exit mobile version