পানছড়ির অলেন্দ্র পাড়ায় সুপেয় পানির হাহাকার

fec-image

পানছড়ি উপজেলার ১নং লোগাং ইউপির ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত অলেন্দ্র কার্বারী পাড়া। এটি উত্তর ফাতেমানগর বড়পাড়া গুচ্ছগ্রাম নামেও পরিচিত। আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে চলা প্রত্যন্ত এলাকার এই গ্রামটিতে অর্ধ শতাধিক ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসবাস। শিশুরা বিদ্যালয়মুখী হলেও বাকীরা কর্মজীবি। বিশেষ করে দিন মজুরী করেই সবাই সংসারের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু খেটে-খাওয়া ও বিদ্যালয়মুখী শিশুরা বছরের পর বছর ধরে পান করছে কুয়োর বিষাক্ত পানি।

গ্রামের পাশে পাহাড়ের তলদেশে অবস্থিত একটি জমির পাশে জমে থাকা কুয়োর পানিতেই মিলছে তাদের তৃপ্তির ঢেকুর। সরেজমিনে উঁচু-নিচু পাহাড় বেয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রাইমারী পড়ুয়া যীথিকা, খুশিতা, উজ্জ্বল বালারা কুয়োর পাশে দাঁড়িয়ে পানি তোলার অপেক্ষায়। এটাই একমাত্র সুপেয় পানির কেন্দ্রস্থল বলে তারা জানালেন।

এই পানিতে যে বিভিন্ন রোগের জীবানু রয়েছে তা তারা জানে না। এলাকার ইউপি সদস্য মো: খোকন মিয়া জানান, অলেন্দ্র পাড়া ছাড়াও পশ্চিম ফাতেমানগর, কাশিপাড়া ও মদন কার্বারী পাড়া এলাকাতেও পানির সমস্যা। এসব জায়গাতেও সবাই কুয়োর পানি পান করে। অনেকবার আবেদন করেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী (অতি: দায়িত্বে) মো: জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, এসব এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই তা আমার জানা ছিলনা। আমার বরাবরে ইউপি সদস্য বা যে কেউ আবেদন করলে আমি দ্রত ব্যবস্থা নেব।

পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: সুমেন চাকমা জানান, কুয়োর পানিগুলো বিষাক্ত। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে পাহাড়ের ময়লা আবর্জনা ও ধান্য জমিনে কীটনাশক ছিটানো হলে এসব কুয়োতে এসে পড়ে। ফুটিয়ে পান না করলে পানিবাহিত রোগে যে কেউ আক্রান্ত হবে। যার ফলে ডায়রিয়া, টাইফয়েড,
কৃমির সংক্রমণ হতে পারে। যা গোপনে গোপনে কাজ করে মানুষকে অসুস্থ বানিয়ে দেয়।

এলাকার কার্বারী বীরবাহু, বয়ো:বৃদ্ধ সোনারতন, নলিনী ও মধুবতি ত্রিপুুরা জানান, ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পানির খুবই হাহাকার। তখন কুয়োতেও পানি উঠেনা। বাধ্য হয়ে চেংগী নদী বা পাশর্^বর্তী খালের দুষিত পানি পান করতে হয়।

এ এলাকার পানির হাহাকারের কথা চিন্তা করে ফাল্গুন-চৈত্র মাসের আগেই কিছু একটা করার জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছে তারা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অলেন্দ্র কার্বারী পাড়া, পানছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন