parbattanews

পানছড়ির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলাম বললেন হাত পাতা লজ্জার কাজ

জন্ম থেকেই দুই চোখে দেখতে পায়না নুরুল ইসলাম। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি কোরআনে হাফেজ। তাই এলাকায় হাফেজ সাহেব নামেই সবাই চিনে। হাফেজ নুরুল ইসলামের বয়স এখন (৩৩)। সে উপজেলার ৫নং উল্টাছড়ি ইউপির মধ্য মোল্লাপাড়ার মৃত মুসলিম উদ্দিনের সন্তান। জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও কোন ধরণের শিক্ষা ছাড়াই অনায়াসে মোবাইলে রিচার্জ ও বিকাশে টাকা লেনদেন করতে পারে। ক্রেতা যা চাইবে নিমিষেই তা বের করে দিতেও পারদর্শী।

এই অভিজ্ঞতা থেকেই নিজ এলাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করে চা, স্টেশনারী, রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসা। স্টেশনারী ও ছোট ছোট শিশুদের খাবার দিয়ে দোকান সব সময় পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখে। টাকা ধরলেই বুঝতে পারে কোনটা কত টাকার নোট। নাম্বার বলে দিলেই রিচার্জ ও বিকাশে নির্ভুলভাবে পাঠাতে পারে টাকা।

সরেজমিনে কথা হয় নুরুল ইসলামের সাথে। সে জানায়, মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে কিছুদিন চাকুরী করেছে। কিন্তু মোয়াজ্জিনের যে কাজ সেটা তার পক্ষে করা সম্ভব হয়না। তাছাড়া দুই হাজার টাকার বেতনে সংসার চলে না তাই আশা সমিতি থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। সমিতির সাপ্তাহিক কিস্তি দিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। পূঁজির অভাবে বিকাশ ও রিচার্জ চলে কোন রকম। তবে তাঁর সোজা কথা হাত পাতা লজ্জার কাজ। তাই অল্পতেই আমি খুশী।

পানছড়ি উপজেলা প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংঘের সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও সে কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সে আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিবন্ধী অফিসার মো. শাহজাহান জানান, সমাজ দেশ ও নিজেকে স্বাবলম্বী করতে সে নিজেই নিজেকে গড়ে তুলেছে তাই আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। ভবিষ্যতে জেলা প্রতিবন্ধী অফিস তার পাশে থাকে সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান।

Exit mobile version