parbattanews

পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের মডেল কেয়ারটেকারের ভূয়া সনদপত্র

Sabbir n copy

স্টাফ রিপোর্টার:

অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বেরিয়ে এসেছে পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের মডেল কেয়ারটেকারের ভূয়া সনদপত্র। পার্বত্য নিউজে এ নিয়ে কয়েকটি পর্ব লেখা হলেও মডেল কেয়ারটেকার সাব্বির মাহামুদ ছিল শক্ত অবস্থানে। আর এ শক্ত অবস্থান গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সাবেক খাগড়াছড়ি জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশানের উপ-পরিচালক জিয়াউল হক।

জিয়াউল হক মডেল কেয়ারটেকারের সর্ম্পকীয় আত্মীয়তার সুযোগ নিয়েই পানছড়ির স্থায়ী বাসিন্দাদের বাদ দিয়ে ভুয়া কাগজ দাখিলকারীকেই জেনে শুনে মডেল কেয়ারটেকার পদে নিয়োগ দিয়েছিল সাবেক উপ-পরিচালক জিয়াউল হক। এ পদে আবেদনকারী স্থায়ী বাসিন্দারা কর্তৃপক্ষের অসাধু ভূমিকায় আজো ভূগছে চরম হতাশায়। অবশেষে এ প্রতিবেদকের হাত ধরে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসতে শুরু করায় তারা পার্বত্য নিউজকে স্বাগত জানায়।

সাব্বির মাহামুদের জন্ম সনদ এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে দুটি। জন্ম তারিখও দুটিতে দু’রকম। মডেল কেয়ারটেকারে চাকুরীর আবেদনে নিবন্ধন নং- ০৮৮৪৩, ব্যক্তিগত পরিচিত নং- ২০০৭৭৫৮০৪৭৮৮৪৩, জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৮৪, স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম- মাইজদিপুর, পো. কাবিলপুর, থানা: সেনবাগ জেলা নোয়াখালী।

অপরদিকে উপজাতীয় স্থায়ী বাসিন্দা সনদপত্র উত্তোলনের সময় ২৪২নং মৌজা প্রধান কার্যালয়ে জমাকৃত জন্মসনদে রয়েছে নিবন্ধন নং- ০৪০০৪, ব্যক্তিগত পরিচিতি নং- ২০১৬৪৬৩৭৭৭৬০০৪০০৪, জন্ম তারিখ ৩ জানুয়ারি ১৯৯৫, স্থায়ী ঠিকানা. গ্রাম মোহাম্মদপুর, পো. পানছড়ি, থানা. পানছড়ি, জেলা. খাগড়াছড়ি।

পানছড়ি উপজেলায় তার বসবাস বছর দু’য়েক হলেও স্থায়ী বাসিন্দা সনদে রয়েছে ২০ বছর ধরে বসবাস। কোন জায়গা জমি না থাকলেও দেয়া রয়েছে জায়গার চৌহদ্দী। এলাকা মোহাম্মদপুর, উত্তরে- মক্তব, দক্ষিনে শামসুন্নাহার, পূর্বে রাস্তা, পশ্চিমে দীন ইসলাম। জায়গার পরিমান দশ শতক।

চতূর শাব্বির মাহামুদ চাকুরীকালীন সময়ে ফাজিল পাশ সনদ প্রদান করলেও চলতি ফাজিল পরীক্ষায় অংশ নিতে বর্তমানে ছুটিতে রয়েছে। আর যে সদন দিয়ে চাকুরী নিয়েছে তা বাংলাদেশের কোন মাদ্রাসার নয়। ভারতের একটি মাদ্রাসার নাম থাকলেও তাতে বানান ভূলে ভরা। ভারতে লেখাপড়া করে থাকলেও সনদ প্রদানের সময় বৈধ পাসপোর্টের কোন কপি জমা নেই। তাছাড়া পানছড়ির অনেক আলেম ওলামারাও এ সনদের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

অনেকে বলেছেন ‘তিনি ফাজিল পাশ করে থাকলে এখন আবার ফাজিল পরীক্ষা দিচ্ছে কেন’। সাবেক উপ-পরিচালক জিয়াউল হকের আত্মীয়তার গ্যাড়াকলে পড়ে পানছড়ি বৈধ কাগজধারীরা চাকুরী বঞ্চিত হয়েছে বলে সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি ভুয়া সনদ প্রদানকারী সাব্বির মাহামুদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিবে তাই দেখার বিষয়।

খাগড়াছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের বর্তমান উপ-পরিচালক মো. ইউসুফ আলী জানান, আমি এখানে এসেছি বেশীদিন হয়নি। সাব্বির মাহামুদের নিয়োগ হয়েছে সাবেক উপ-পরিচালক জিয়াউল হকের সময়। তারপরও তার অভিযোগ সম্পর্কে আমি জেনেছি। যাচাই বাঁচাই করে প্রমান পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা হবে।

পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিককে তার কাগজ পত্র ও একিই লোকের দুটি জন্ম সদন ও জন্ম তারিখ দু’রকম দেখানো হলে তিনি তা দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে তিনি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান। সাব্বির মাহামুুদের নিকট সনদপত্রাদি চাওয়া হলে তিনি এ প্রতিবেদককে কোন কাগজপত্রাদি দিতে পারবেন না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন।

উল্লেখ্য গত ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিমূলে মডেল কেয়ার টেকার পদে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা আবেদন করলেও ভূয়া সনদ প্রদানকারী সাব্বির মাহামুদকে নিয়োগ দেয় তার আত্মীয় সাবেক উপ-পরিচালক জিয়াউল হক। এ ব্যাপারে পানছড়ির অভিজ্ঞ মহলের দাবি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের মতো একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের দু’নম্বরী লোকের তালিকা করে তাদের শুধু চাকুরীচ্যুত নয় কাঠগড়ায়ও দাড় করানো দরকার।

Exit mobile version