পারিবারিক কলহের জের কাউখালীতে সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা

fec-image

পারিবারিক কলহের জের ধরে মধ্য রাতে সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী। ১ আগস্ট রাত ১২টার পর কাউখালী উপজেলার কাশখালীর লেইঙ্গাছড়ি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে পুলিশ ধারণা করছে।

হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইনবাগান এলাকা থেকে ঘাতক বিল্লালকে আটক করে পুলিশে সপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র কর। এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় মামলার পক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিহতরা হলেন, উপজেলার কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৬৮) ও মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৭)।

ওসি জানান, হত্যাকণ্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, নিহতদের পুরো শরীর সাবাল দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে অত্যান্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

কাশখালী সমাজের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান কালু জানান, চার বছর পূর্বে কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বাইরা গ্রামের মৃত আনজু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৫) এর সাথে কাউখালীর কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। তিন বছরের সংসারে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের দু’বছর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বনিবনা হচ্ছিলো না। ফলে গত ২৯ জুলাই দু’পক্ষ সামাজিক বৈঠকের পর স্ত্রী ফাতেমা স্বামী বিল্লালকে ইসলামী রীতি অনুযায়ী কাজি ডেকে তালাক দেন।

স্থানীয়রা জানান, স্ত্রীর কাছ থেকে তালাক প্রাপ্ত হয়ে বিল্লাল কুমিল্লা চলে যায়। ১৯ মাস বয়সের সন্তান বায়তুল্লাহকে নিয়ে ফাতেমা মায়ের সাথে কাউখালীতে অবস্থান করে। ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে বিল্লাল পুনরায় কাউখালী আসে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে মধ্য রাতে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে হাতে থাকা সাবল দিয়ে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে উপর্যপূরী আঘাত করে হত্যা করে। এ সময় ১৯ মাস বয়সী ছোট্ট বায়তুল্লাহ কোনো রকম হামাগুড়ি দিয়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে কান্না করতে থাকলে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। ততক্ষণে ঘাতক বিল্লাল পালিয়ে যায়।

রাত তিনটায় রক্তাক্ত কাপড় চোপড় নিয়ে ঘাতক বিল্লাল উপজেলা সদর হয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইন বাগান এলাকায় স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র করের নেতৃত্বে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ২ আগস্ট শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম।

এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন