parbattanews

পার্বত্যাঞ্চলে নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষা সুরক্ষায় পাঠদান

Rangamat student pic-1 copyস্টাফ রিপোর্টার:

পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব মাতৃভাষা সুরক্ষার জন্য চালু করা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চলছে তাদের নিজস্ব ভাষায় পাঠদান। এ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর বৈচিত্র্যময় ভাষা ও সংস্কৃতি যেমন রক্ষা পাচ্ছে, তেমনি পাহাড়ের দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার শিশুরাও স্কুলমুখি হয়ে উঠছে।

ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে তিন পার্বত্য জেলা সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে বেশকিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠদানের কয়েকটি বিদ্যালয়। যেখানে চাকমা, মারমা, ত্রিপুর, তঞ্চঙ্গ্যাসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় কথা বলার পাশাপাশি বর্ণামালা চেনা ও লেখায় পারদর্শী করে তোলা হচ্ছে শিশুদের। যার মাধ্যমে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব মাতৃভাষার চর্চা আরও পোক্ত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে মিলে দশ ভাষাভাষি ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। প্রত্যকটি সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে। উপজাতীয়দের ভাষা উন্দো-এরিয়ান, সিয়ানিজ, চাইনীজ ও টিবেটো-বার্মান পরিবারভুক্ত। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, চাক, খুমি, পাংখোয়া, লুসাই ও খিয়াং নৃ-গোষ্ঠীগুলোর ভাষা রক্ষা নিয়ে আলোচনা কম নেই। তাতে চেষ্টাও চলছে নানামুখী। যেমন তিন পার্বত্য জেলার নৃ-গোষ্ঠীদের মাতৃভাষায় পাঠদানের পাশাপাশি, সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমেও চলছে ভাষা রক্ষার প্রচেষ্টা। তাতে সফলতাও এসেছে। শৈল্পিক উপায়ে ভাষার যেমন প্রজন্মান্তর হচ্ছে, তেমনি সমৃদ্ধ হচ্ছে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাও।

এব্যাপারে শিক্ষক বিপ্লব চাকমা ও ডেভিট চাকমা বলেন, মাতৃভাষায় পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ি অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষায় পাঠ্যবই যেমন- চাকমা কিংবা মারমা বর্ণমালার পাশাপাশি যদি বাংলা বর্ণমালাও দেওয়া হয় তাহলে শিক্ষকদের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে সহজ হবে।

রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, পার্বত্যাঞ্চলের বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব মাতৃভাষায় পড়া-লেখা, শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য সরকার একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তা শিক্ষানীতি ২০১০ সালে উল্লেখ্য আছে। এ নীতি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষায় বেশ কয়েকটি বই প্রণয়ন করেছে। কিন্তু শুধুমাত্র বই চালু করলে হবে না। ওই সব ভাষায় পড়ানোর জন্য দক্ষ শিক্ষক প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষক  রয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলতে পারে। কিন্তু ওই সব ভাষায়  লিখতে ও পড়তে পারে না। সে জন্য পাঠদানকারী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে রাঙামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃষাভায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

Exit mobile version