পার্বত্য চট্টগ্রামে বীর সেনানিদের বীরত্বগাঁথা-৯
১৯৭৮ সালের ১৭ জুন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে এসএসসি-৬ কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) মোঃ রকিবুর রহমান, বীর প্রতীক, ই বেংগল (তৎকালীন ইউনিট ১৬ ই বেংগল)।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে জানা যায়, ক্যাপ্টেন মোঃ রকিবুর রহমান ১৬ ই বেংগল ইউনিটে পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত থাকাকালীন ১৯৮২ সালের ২৫ জানুয়ারি সকাল ০৯টা ৪০ মিনিটে বিএফআইডিসি’র ট্রান্সপোর্ট অফিসার আসাদ আহমেদ, লংগদু আঞ্চলিক হেডকোয়ার্টারে আসেন ও ক্যাপ্টেন রকিব’কে শান্তিবাহিনী কর্তৃক তাদের টাগবোট ও বার্জ হাইজ্যাক হওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন যে, বার্জটি ভাইবোন ছড়া এলাকার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনা শোনার পর তিনি অপারেশন পরিচালনার প্রস্তুতি শুরু করেন।
ক্যাপ্টেন রকিব স্পিড বোটে মাত্র ৪ জন অন্যান্য পদবীর সেনাসদস্য ও একজন সিগন্যাল ম্যানসহ যাত্রা শুরু করেন এবং তার অধিনস্থ নায়েব সুবেদার মান্নানকে অতিরিক্ত ৫ জন নিয়ে আসতে নির্দেশ দেন। তিনি ঘটনা স্থলে পৌঁছে দেখতে পান যে, জায়গাটা ঝোপঝাড় ও নলখাগড়ায় পরিপূর্ন। সেইসাথে আড়াল থেকে তিনি একজন শান্তিবাহিনীর সদস্যকেও দেখতে পান। এসময় ক্যাপ্টেন রকিব দুইজন সেনাসদস্যকে দিয়ে নৌকা পাহারায় রেখে একজন এলএমজি ম্যানকে নিয়ে জংগলে প্রবেশ করেন এবং একটি উঁচু স্থানে এলএমজি টি মোতায়েন করেন। এসময় হঠাৎ তিনি দুষ্কৃতিকারীদের প্রহরীর Halt Handsup আওয়াজ শুনতে পান ও সাথে সাথে মাত্র ১০ গজ দুরে থাকা দুষ্কৃতিকারীগন তার উপর .৩০৩ রাইফেল ও এসএমসি’র গুলি বর্ষণ শুরু করে।
চৌকস ক্যাপ্টেন রকিব নিজেকে আড়াল করে অভাবনীয় পারদর্শীতা ও দক্ষতার সাথে দুস্কৃতিকারীদের ওপর গুলি বর্ষন করেন এবং ২ জন শান্তিবাহিনীর দুষ্কৃতিকারীকে ঘায়েল করেন। সেইসাথে ১টি এসএমসি, ৮৭ রাউন্ড এ্যামোনিশন, ১টি .৩০৩ রাইফেল ও এ্যামোনিশনসহ একজন শান্তিবাহিনীর সদস্যকে গ্রেফতার করেন।
পরবর্তীতে ১৯৮২ সালের ০৫ অক্টোবর তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি ক্যাপ্টেন মোঃ রকিবুর রহমান’কে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করেন।