পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৭ বছর
আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরে চলমান পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয় পক্ষ বা বহিঃশক্তির মধ্যস্থতা ছাড়াই তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই ঐতিহাসিক শান্তির দলিলটি স্বাক্ষরিত হয়।
শান্তিচুক্তিতে সর্বোমোট ৭২টি ধারা রয়েছে। ৭২টি ধারার মধ্যে শান্তিচুক্তির ৬৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে, অবশিষ্ট ধারার বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নের ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ অঞ্চলের উন্নয়নে গঠিত হয় পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ। চুক্তি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক, অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন চলমান রয়েছে। পার্বত্য জেলাসমূহে অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমি দল মত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করা আহ্বান জানাচ্ছি।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেন, ‘১৯৯৭ সালের এই দিনে বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এটি একটি রাজনৈতিক চুক্তি ছিল যা শান্তিচুক্তি নামেও পরিচিত। দেশের মোট আয়তনের এক দশমাংশ এলাকায় পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাই পার্বত্য এ অঞ্চলকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। পার্বত্য জেলা সমূহের নৈসর্গিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ পর্যটন শিল্পের প্রসারে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে নানামুখী সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে বেকারত্ব হ্রাস পাবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং জীবনযাত্রার উন্নতি ও সামাজিক বৈষম্য দূর হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল অধিবাসীদের জীবনের শান্তি সম্প্রীতি ও উন্নয়ন অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আবশ্যক।’