পার্বত্য তরুণদের দ্বিধা বিভক্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে- প্রসিত বিকাশ খীসা
দুলাল হোসেন.খাগড়াছড়ি থেকে:
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)“র প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে এক ছাত্র সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সাড়ে এগারটার সময় ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত খীসা মঞ্চে পর্দা টেনে এ সমাবেশের উদ্বোধন করেছেন। এ সময় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা দু’যুগপূর্তির প্রতিকী হিসেবে ২৪ বার ঘন্টা বাজানো, কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে দেয় । সমাবেশ শেষে একটি র্যালি বের হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার, বাসস্টেশন ঘুরে কাসেম স’মিল, খবংপুড়িয়া হয়ে আবার সমাবেশ স্থলে এসে শেষ হয়।
পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণতান্ত্রিক গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সালমান রহমান। এছাড়া সমাবেশ মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা, সচিব চাকমা ও শান্তিদেব চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি নতুন কুমার চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি কণিকা দেওয়ান, পার্বত্য নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা ও সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের চবি শাখার আহ্বায়ক এমএম পারভেজ লেলিন প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত খীসা বলেন, প্র্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ সমস্যার পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট বাধা আসতে পারে । সকল প্রকার বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। কোন বাধা আর আমাদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশের দুই তৃতীয়াংশ সেনাবাহিনী রাখার কোন প্রয়োজন নেই। এ অঞ্চল রক্ষার জন্য তরুণ প্রজন্ম যদি সম্পৃক্ত না হয়, তাহলে দখলদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সেনাবাহিনী এ অঞ্চল রক্ষা করতে পারবে না।
ইউপিডিএফ সভাপতি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে কামান, বেয়নেট উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ঐতিহাসিক লোগাং লংমার্চে তরুণ ছাত্র সমাজই অংশগ্রহণ করেছিল। ছাত্র সমাজের রয়েছে অফুরন্ত শক্তি ও সম্ভাবনা, তাকে দুর্বল করতে নড়েবড়ে চুক্তির সাথে বেঁধে নিঃশেষ করার আয়োজন চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তরুণ প্রজন্মকে দ্বিধা বিভক্ত করার জন্য শাসকগোষ্ঠি নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক দ্রব্য বিকিয়ে দিয়ে ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, ছাত্র সমাজের বা পিসিপি’র নাম ভাঙিয়ে কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য ছাত্র সমাজকে সজাগ থাকতে হবে। সকল ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ফয়জুল হাকিম তার বক্তব্যে বলেন, যে সময়ে পিসিপি দুই যুগ পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে ঠিক সে সময়েই এদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকার এদেশের জনগণের আশা-আকাঙক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তি কাউন্সিল দেশের বাঙালি ভিন্ন চল্লিশটির অধিক জাতির স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন করছে।
টিপু বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন, যে বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো বলতে হবে সমাবেশ সফল হয়েছে। পাহাড়ি জনগণের ভূমি কেড়ে নেয়া যাবে না। সরকার যাদের দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করছে তার বিরুদ্ধে দেশের মেহনতী জনগণ প্রতিবাদ জানায় এবং পাহাড়ী জনগণের ন্যায্য আন্দোলনের পাশে থাকবে।