parbattanews

পালংখালীতে ওয়াকফ এস্টেটে গুলিবর্ষণ অস্ত্র উদ্ধারসহ গ্রেফতার ১০

গ্রেফতার

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ার ক্রাইম জোন হিসেবে খ্যাত সন্ত্রাসের জনপদ পালংখালীর আঞ্জুমান পাড়া গ্রামে ওয়াকফ এস্টেটের জায়গা জবরদখল ও পাকাধান লুটপাট করতে গিয়ে শতশত রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মহিলাসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি’র অতিরিক্ত সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানান। সোমবার বিকেলে ৫ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পালংখালী ইউনিয়নের মরহুম মৌলভী আব্দুল লতিফ আনোয়ার চৌধুরী ওয়াকফ এস্টেটের জমি ও চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিশেষ করে ওয়াকফ এস্টেটের মতোয়াল্লি দাবী নিয়ে লতিফ আনোয়ার চৌধুরী প্রকাশ খোকা মিয়া ও সোহেল মোস্তফা চৌধুরী প্রকাশ সোহেল মিয়ার মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব চলে আসলেও সাধারণ গ্রামবাসী, প্রজা ও চাষীদের সমর্থনে খোকা মিয়া এস্টেটের দেখভাল ও পরিচালনা করে আসছেন।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন জুয়েল বলেন, সোমবার বিকেলে সোহেল মোস্তফা চৌধুরীর নেতৃত্বে শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আঞ্জুমান পাড়া ওয়াকফ এস্টেটে ঢুকে ব্যাপক গুলি বর্ষণ করে ও লুটপাট চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভাড়াটিয়া ও চিহিৃত অস্ত্রধারীরা মুর্হু মুর্হু গুলি বর্ষণ করলে এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব ও গুলির শব্দে নিরীহ জনগণ এলাকা ছেড়ে পালাতে থাকে। এ সময় ওয়াকফ এস্টেটের অফিস দখল করে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল সোহেল বাহিনীর অস্ত্রধারীরা। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয় কেয়ারটেকার আবুল মনজুর প্রকাশ আলী মনজুর (৫৫), অফিস সহকারী শাহারাজ হোসেন (৪৫)সহ ৩ থেকে ৪ জন মহিলা।

স্থানীয় মেম্বার সোলতান আহমদ বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য গুলিবর্ষণ করে তান্ডবলীলা চালায়। পাকাধান লুটপাট করে। খবর পেয়ে আঞ্জুমান পাড়া সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান চালায়। অভিযান কালে সোহেল মোস্তফা চৌধুরী প্রকাশ সোহেল মিয়া (৫৫), শফিকুল ইসলাম প্রকাশ মতিয়া (৪৫), মোরশেদ (৩০), আবু বক্কর (২৭), সাদ্দাম হোসেন (২৮), আক্তার (৩২)সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৩টি অবৈধ অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে বলে উখিয়া থানার ওসি জানান। অপর এক সূত্রে জানিয়েছে সোহেল মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় ৯৫০ একর আয়তন বিশিষ্ট ওয়াকফ এস্টেটের জমিতে চাষাবাদকৃত পাকাধান লুট করার জন্য সশন্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা।

ওয়াকফ এস্টেটের মোতায়াল্লি লতিফ আনোয়ার চৌধুরী প্রকাশ খোকা মিয়া বলেন, ১০-১২ দিন ধরে কক্সবাজারের কিছু চিহিৃত সন্ত্রাসী ক্যাডার নিয়ে আমার ওয়াকফ এস্টেটে হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছিল। আমি বিষয়টি টের পেয়ে  শুক্রবার উখিয়া থানার ওসিকে অবহিত করে ওয়াকফ এস্টেট থেকে কৌশলে চট্টগ্রামে চলে আসি। ইতোমধ্যে সোহেল মোস্তফা চৌধুরী স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করে আমার অংশীদারিত্ব ওয়াকফ এস্টেটটি দখল করতে  ন্যাক্কারজনকভাবে অস্ত্রধারীরা সশন্ত্র হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে হাইকোর্টে সোহেল মোস্তফা চৌধুরীর মোতায়াল্লির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটপিটিশন মামলা ও একই সাথে ১৬৪ ধারা চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) বরাবর আবেদন করা আছে।

এ প্রসঙ্গে সোহেল মোস্তফা চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওয়াকফ এস্টেটের বৈধ মোতায়াল্লি তিনি। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন।

Exit mobile version