নারিশ্চা বিটের বনপ্রহরী মো. আলী আহমদ চৌধুরী বলেন, বাগানের গাছ পরিপক্ক হওয়ায় গাছ খেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শাসকদলের নেতা হারুন ও বাচ্চুর নেতৃত্বে ২০০৭-০৮ সনের বাগানের প্রায় ৫০০ আকাশমণি গাছ নিধন করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা। বনাঞ্চল উজার করে বনের ভেতর ৮টি বসতঘর গড়ে তোলা হয়েছে। ত্রিপুরা সুন্দরী মৌজার ডিসেম্বর বাবুঘোনা এলাকায় ৫০ একর ভূমির প্রায় ৫০ হাজার গামারী গাছ কেটে উজার করা হয়েছে। প্রতিটি গামারী গাছের দাম একহাজার টাকা করে গড়ে ৫ কোটি টাকার গাছ নিধন করা হয়েছে। বনবিভাগ লোকজন অভিযান চালাতে গেলে প্রভাবশালীদের দাপটে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয় বলে বনকর্মীরা জানান। সামাজিক বনায়নের একজন উপকারভোগী জানান, রাতের আধারে প্লটের গাছ চুরি হয়ে যাচ্ছে। বাধাঁ দিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায় কতিপয় কাঠ পাচারকারীরা। লাখ লাখ টাকা খরচ করে বনায়ন করেও সুফল না পাওয়ায় প্লট মালিকরা উৎকন্ঠায় ভুগছেন।
বনবিভাগের ভিলেজার মো. আব্দুল নবী বলেন, গুটিকয়েক শাসকদলের নেতাকর্মীরা বনবিভাগের সরকারী বাগান ধ্বংসযজ্ঞ নিধন চালাচ্ছে। কাঠ পাচাররোধে ব্যবস্থা নিতে গেলে বনপ্রহরীদের উপর নির্যাতন চালানো হয়। শিলক বহনাঘাটের মো. আনিছ, রাবারড্যামের মো. সিরাজুল ইসলাম, রাজারহাটের মো. বাদশা, পদুয়া দারিকোপ এলাকার মো. হারুন, বাচ্চুসহ একাধিক চোরাই কাঠ পাচারকারী বনবিভাগকে তোয়াক্কা না করে বনায়নের গাছ পাচার করছে। ভিলেজার আরো বলেন, আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। কাঠ পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই। লোকবল বাড়লে কাঠ পাচার রোধ করা সম্ভব হবে।
রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মো. এ.বি.এম ইউছুপ বলেন, লোকবল সংকটের কারনে একজন বনপ্রহরী দিয়ে তেরশ একর বনভূমি পাহাড়া দিতে হচ্ছে। একজন ফরেষ্টার, দুজন বনপ্রহরী, একজন বনমালী দিয়ে শতভাগ কাঠ পাচার রোধ করা সম্ভব নয়। চার জনের স্থলে তিনজন রয়েছে। শাসকদলের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা বনবিভাগকে জিম্মি করে বাগানের গাছ উজার করছে। আমরা খুবই অসহায় দিনযাপন করছি। কাঠ পাচারে বাধাঁ দিলে নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়া নারিশ্চা বিট অফিসে কোন খাবার পানি ও বাথরুমের ব্যবস্থা নেই।