সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত রাজস্থলীর নিম্নাঞ্চল

fec-image

এবারে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা দুদিন রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলীতে ৷ টানা দুদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার কয়েক টি স্থান।

এদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে রিকশাচালক, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা, দিনমজুরদের জীবনযাপন হয়ে পড়েছে দুঃসাধ্য।

এছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বাঙ্গালহালিয়া এলাকার মানুষজন। শনি ও রবিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। অটো চালক, রিক্সা চালক ব্যবসায়ী ও দিনমজুরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে তাদের আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ক্ষতি হয়েছে সবজি ক্ষেতের। সাগর নামক এক মৎস্য প্রকল্পের মালিকের মৎস্য প্রকল্প থেকে পানির স্রোতে মাছ ও মাছে পোনা ভেসে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,

টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার তিন নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ডাক বাংলা পাড়ার কালি বাড়ী সংলগ্ন এলাকা সহ বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এ দিকে কর্মজীবিী মানুষরা জানান, টানা বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের চলাচল কমে গেছে। এতে তাদের পণ্য বিক্রি ও কমে গেছে। অনেকেই বলেন, আয় কমে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমরা খুব কষ্ট করে আজ দুই দিন মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এদিকে উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া বাজারের পাশে অপরিকল্পিতভাবে দোকান গড়ে উঠায় সামান্য বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

বাঙ্গালহালিয়া বাজারের পূর্বপাশের এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘টানা দুদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকার রাস্তা ডুবে গেছে৷ নিচু এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে৷ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে পুরো এলাকা ডুবে যায় এখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই জরুরি।

তিন নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ৫,৬,৭ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য বাপ্পি দেব বলেন, বৃষ্টি আমাদের এই এলাকার মানুষের জন্য অভিশাপ৷ প্রতি বছর টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকা সবার আগে প্লাবিত হয়৷ বাঙ্গালহালিয়া খাল দখল করে অপরিকল্পিত ভাবে ঘর নির্মাণ করার কারণে আমাদের এই দুর্বিষহ জীবন পার করতে হচ্ছে৷ ফলে পানি নিস্কাসনের কোন পথ নেই৷

রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আবু সৈয়দ ও রফিক মিয়া জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের জমির রোপা বরকটি, তিত করলা কইন্দ্যা,বেন্ডি,নারিস শাখ, শষা খেত তলিয়ে গেছে। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

মৎস্য খামারী সাগর দাশ বলেন, আমার মৎস্য প্রকল্প থেকে পানির সাথে মাছ ভেসে গেছে। তবে বৃষ্টি আর না বাড়লে তেমন ক্ষতি আশঙ্কা নেই। আজ সকালে মুষলদারে বৃষ্টি হওয়াতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে মাইকিং করা হয়েছে । প্রশাসনের উদ্যাগে আশ্রয় কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত থাকলেও সে খানে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে স্থানীয়রা।

কাপ্তাই নদীর পাশে ঝুকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে উপজেলা প্রশাসনের দিনবর মাইকিং করা হলেও তারা ঘরবাড়ী ছেড়ে যাচ্ছেনা। ফলে যেকোন মুর্হুতে দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে। রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজীব কান্তি রুদ্র ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা গুলো পরিদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন উপজেলার তিন টি ইউনিয়নের প্রাইমারী স্কুল গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ঐ কেন্দ্র নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন স্থানীয়দের।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাজস্থলী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন