parbattanews

পাহাড়ের তিনটি সংগঠন পেয়েছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৭’

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
সমাজের তৃণমূল পর্যায়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় তরুণ উদ্যোক্তদের ৩০টি সংগঠনকে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৭’ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি সংগঠনও রয়েছে। রাঙ্গামাটি থেকে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে জুমফুল থিয়েটার এবং সাপোর্টিং পিউপাল অ্যান্ড রিবিল্ডিং কমিউনিটিস (এসপিএআরসি)। অপরদিকে খাগড়ছড়ি থেকে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবক ফোরাম।

জানা গেছে, শনিবার (২১ অক্টোবর) সাভারের শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইয়ুথ সেন্টারে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়।

আয়োজকরা জানান, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া প্রায় ১৩০০ সংগঠনের মধ্য থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০টিকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের থেকে নির্বাচিত করা হয় ১০০ সংগঠনকে। সেগুলোর মধ্যে সমাজ উন্নয়ন, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এই তিন ক্যাটাগরিতে মোট ৩০টি সংগঠনকে পুরস্কার দেওয়া হল।

সিআরআই’র তরুণদের প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলা এই পুরস্কার দেয়। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তরুণ উদ্যোক্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

সমাজ উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য মনোনীত সংগঠনগুলো হল- যশোরের স্বপ্ন দেখো সমাজ কল্যাণ সংস্থা, বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটি, কুমিল্লার দুর্বার ফাউন্ডেশন, সিলেটের কাকতাড়ুয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের আই পজিটিভ, ঢাকার মডেল লাইভস্টক অ্যাডভান্সমেন্ট ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরার জাগরণ ক্লাব, নেত্রকোণার মানবকল্যাণকামী অনাথালয়, মৌলভীবাজারের উত্তরণ বাংলাদেশ, রাঙামাটির সাপোর্টিং পিউপাল অ্যান্ড রিবিল্ডিং কমিউনিটিস (এসপিএআরসি), ঢাকার ওয়ার্কস ফর হিউম্যানিটি, নওগাঁর শিশু বিকাল, খুলনার মানব কল্যাণ ইউনিট, দিনাজপুরের স্বাধীন, মৌলভীবাজারের প্রত্যয়, চাঁদপুরের বি রিলেটেড টু অডিও ভিজ্যুয়াল এডুকেশন (ব্রেইভ), গাইবান্ধার আমার স্কুল, সিলেটের ইচ্ছাপূরণ সামাজিক সংগঠন, নাটোরের কল্লোল ফাউন্ডেশন ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংগঠন।

খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছে রাঙ্গামাটির জুমফুল থিয়েটার, সিলেটের থিয়েটার মুরারিচাঁদ, বগুড়ার চৌপাশ নাট্যাঞ্চল, ঝিনাইদহের কথন সাংস্কৃতিক সংসদ, পঞ্চগড়ের মুক্ত সাংস্কৃতিক সংঘ, সিলেটের ইনোভেট বইপড়া উৎসব, কুইজার্ডস, ঠাকুরগাঁওয়ের রাঙ্গাটুঙ্গি ইউনাইটেড উইমেন ফুটবল একাডেমি, গাজীপুরের হুইলচেয়ার ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর ফুটবল একাডেমি।

জুমফুল থিয়েটার: রাঙ্গামাটিতে নতুন প্রজন্মের মাঝে সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটানোর ইচ্ছা থেকে ২০১৫ সালে জুমফুল থিয়েটার গঠন করেন নিরুপম চাকমা। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ২৫০ জন। প্রতি সপ্তাহে নাটক মঞ্চস্থ, গান ও নাচের আয়োজন করে এই সংগঠনটি। তাদের লক্ষ্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নতুন নতুন সাংস্কৃতিক কর্মী সৃষ্টি। নিয়মিত সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তরুণ ও যুবাদের মাদক ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। সংগঠনটির মঞ্চ নাটক বর্তমানে বেতারে নিয়মিত ভিত্তিতে প্রচারিত হচ্ছে। শিশু-কিশোর ও তরুণদের জন্য সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করে সংগঠনটি।

সাপোর্টিং পিউপাল অ্যান্ড রিবিল্ডিং কমিউনিটিস (এসপিএআরসি): নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করার প্রত্যয় নিয়ে ২০১৩ সালে রাঙ্গামাটিতে যাত্রা শুরু করে সাপোর্টিং পিউপাল অ্যান্ড রিবিল্ডিং কমিউনিটিস (এসপিএআরসি)। বর্তমানে ৫০ জন সদস্য সংগঠনটির। নারী ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার, শিশু অধিকারসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।

স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবক ফোরাম: খাগড়াছড়িতে নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামেন স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবক ফোরামের প্রধান মো. রানা হামিদ। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হওয়া তার এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন ঝরে পড়া শিশুকে আবারো স্কুলে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে তার সংগঠন স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবক ফোরাম। এর পাশাপাশি স্বাক্ষরতার জ্ঞান লাভ করেছেন ৮০ জন নিরক্ষর মানুষ। ৫০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থী পেয়েছেন শিক্ষা উপকরণ। এর পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় ৫ হাজার বৃক্ষ রোপণ, ঈদে ৭০ জনের বেশি এতিম ও দুস্থদের বস্ত্র প্রদান, শীত বস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণ, নারীর প্রতি সহিংসতা হ্রাসে সেমিনার আয়োজন ও লিফলেট বিতরণসহ মেডিকেল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রতি বছর ৫০-৬০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে সংগঠনটি। এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৬০ জন।

Exit mobile version