পাহাড়ে প্রাণচঞ্চলতায় ভরে উঠবে পর্যটন এলাকা

মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা নয় দিনের ছুটির ফাঁদে পড়ছে দেশ।
এই নয় দিনে ঈদের ছুটিতে ভ্রমণ পিপাসুরা আগমন ঘটবে পাহাড়ে, এ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবাই ছুটবে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আর বান্দরবানে ১১টি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস দেখতে ছুটে আসবেন পর্যটকেরা। দীর্ঘদিন করোনার কারণে মন্দা কাটিয়ে আবারও পাহাড়ের পর্যটন অর্থনীতি চাঙা হবে এমনটাই আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
শহরে হোটেল-মোটেলের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এরই মধ্যে জেলা শহরের হোটেল-মোটেলগুলোতে প্রায় অধিকাংশ কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে। যার হার ৫৫-৬০%। তবে ঈদের পরে বিশেষ করে ৫ ও ৬ তারিখ এ দুই দিন পর্যটকরা কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন আগাম।
হোটেল হিলটনের ব্যবস্থাপক এস এম আক্কাস উদ্দীন জানিয়েছেন,পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো রমজান মাস জুড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। হোটেলের রুমগুলো ভালোভাবে সাজানো হয়েছে। ঈদের পরের দিন থেকে পর্যটকের চাপ রয়েছে। এরই মধ্যে ৫-৬ তারিখ হোটেলের ৮০% কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে।
পর্যটনকেন্দ্র নীলাচলের পথে ফানুস রিসোর্টের ব্যবস্থাপক বলেন, পর্যটকদের জন্য আমাদের রিসোর্ট পুরোটাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রেখেছি। এর মধ্যে অনেকে কক্ষের জন্য আগাম বুকিং দিয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে ঈদের ছুটিতে এবার প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটবে।
শহর থেকে কাছে মেঘলা ও নীলাচল পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, মেঘলা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রং দিয়ে সাজানো হচ্ছে নতুনভাবে। আর নীলাচলে যাওয়ার পথে টাইগার পাড়া সংলগ্ন ভ্রমণ পিপাসুদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ যাত্রার সুবিধার্থে খানাখন্দ রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে।
ফোরহুইলার গাড়ির মালিক ও চালকেরা জানিয়েছেন, এদিকে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে যানবাহন বিশেষ করে ভাড়া গাড়ির ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটররাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলা ও উপজেলার তিন শতাধিক পর্যটক গাইড, দুই শতাধিক চাঁদের গাড়ির (ফোরহুইল গাড়ি) চালক অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
তারা আরো জানান, প্রচুর গরম আর মুসল্লীদের রোজার কারণে এই পার্বত্য জনপদ বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা একেবারে নেই বললেই চলে। কিন্তু এবারে ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকের উপচে পড়া ভীড় থাকবে এমনটাই আশা করছি।
পর্যটন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারেনি। ঈদে লম্বা ছুটি থাকার কারণে এখানে প্রচুর পর্যটক আসবে। এখানে ৭০টি হোটেল মোটেল রিসোর্ট আছে। যার ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫ হাজারের অধিক। এরই মধ্যে হোটেলগুলোতে ৪০-৫০% অধিক আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
বান্দরবানের ট্যুরিস্ট পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, এখানে অনেক পর্যটকের সমাগম হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটা পর্যটনকেন্দ্রে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ট্যুরিস্টদের যে কোন প্রয়োজনে আমরা তাৎক্ষনিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।