পাহাড়ে যারা চাঁদাবাজি এবং রক্তপাত করছে তাদের জন্য ভয়ংকর দিন আসছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এমপি বলেছেন, ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যে শান্তিচুক্তি করেছিলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্যাঞ্চলের অশান্তির কথা চিন্তা করে এই চুক্তি করেছিলেন। তা আমরা প্রতিষ্ঠিত করেছি। এই চুক্তিকে শ্রদ্ধা করে এবং মেনে অন্যান্য অঞ্চলের মত পার্বত্যাঞ্চলেও শান্তি ফিরিয়ে আনুন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে ২য় দফায় তিন পার্বত্য জেলার আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে একটি শান্তির সুবাতাস বইছে। এখানে জঙ্গি, সন্ত্রাস দমন করে আমরা যে নজির সৃষ্টি করেছি। শুধু জঙ্গি, সন্ত্রাস নয়, আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক সচেতনার বাংলাদেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছি। এই অসাম্প্রদায়িক দেশে অহেতুক রক্তপাত হউক তা আমরা চাই না। বাংলাদেশ আজকে সারা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে এই দেশে কে বাঙ্গালি, কে পাহাড়ি, কে বৌদ্ধ এবং কে হিন্দু কোন জাতির ভেদাভেদ নাই। এক কথায় সবাই বাংলাদেশী।
মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে যারা চাঁদাবাজি করছেন, খুন করছেন এবং শুধু শুধু রক্তপাত করছেন তাদের জন্য ভয়ংকর দিন আসছে। কোথাও গিয়ে রেহাই পাবেন না এবং তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করবো। আর যারা এগুলো করাচ্ছেন, তারাও বিচারের মুখোমুখি হবেন। খুব শীঘ্রই এটা আপনার দেখতে পাবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি এই তিন পার্বত্য জেলা হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে গেছে। হঠাৎ করে আমরা দেখছি অনাকাঙ্খিতভাবে রক্ত ঝরছে। যেটা আপনাদের কেউরই কাম্য নয়। এই ধরণের পরিস্থিতির জন্য যে কোন চ্যালেন্স মোকাবিলা করতে সক্ষম। তাতে কেউ যদি মনে করেন আর ঘরে বসে বসে চিন্তা করেন, অস্ত্রবাজ ও দুষ্কৃতিদের অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এই অঞ্চল অচল করবেন, সেটি যদি স্বপ্ন থাকবে, সেটি স্বপ্নই থাকবে, কখনো সফল হবে না। আমরা ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করছি বলে মনে করবেন না আমাদের ক্ষমতা নাই। আমরা অত্যন্ত দৃঢ়স্থের সাথে বলতে চাই যে ঘটনাগুলো জেনে গেলাম। এগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করবো এবং তিনি যাচাই বাছাই করে যে দিক নির্দেশনা দিবে তা পালন করতে সক্ষম হবে এবং এই অঞ্চলে কিভাবে শান্তি আনা যায় তার ব্যবস্থা করবো।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, রাঙ্গামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা, বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, পুলিশের আইজিপি মো. জাবেদ পাটোয়ারী, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মিসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব সুদত্ত চাকমা, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক কাজী শরীফ কায়কোবাদ সহ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।