parbattanews

পাহাড়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

তিন পার্বত্য জেলায় সন্তু লারমার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বছরে ৪ শত কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে। চাঁদা না দিলে অপহরণ-খুন করা হয়। পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের কাছ থেকে তোলা চাঁদাবাজির এ টাকা দিয়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র কিনে। আর সে অস্ত্র দিয়ে পার্বত্যবাসীদের হত্যা করে। জেএসএস চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে নেতারা আরাম আয়েশে থাকে এবং তাদের ছেলে মেয়েদের বিদেশে পড়া-লেখা করায়।

জুম্মো জাতিস্বত্তার কথা বলে তারা পাহাড়ে বিভেদ ও অশান্তি সৃষ্টি করে চাকমা ছাড়া অন্য ক্ষুদ্র জাতিকে দাবিয়ে রাখতে চায়। সন্তু বাহিনী পাহাড়ি কোন ছেলে-মেয়ের হাতে কলম তুলে দিতে পারেনি। কলমের বদলে তুলে দিয়েছে অস্ত্র। আদর্শ জাতি গঠনের শিক্ষা না দিয়ে তারা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শান্তি বাহিনীর সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত তারা শুধু লুট করেছে। তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলে স্থানীয়দের প্রাণ কেড়ে নেয়, নয়তো মোটা অংকের টাকা লুট। লুট করা ছাড়া তারা পাহাড়িদের আর্ত সামাজিক উন্নতি ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কিছুই করতে পারেনি।

মঙ্গলবার রাজবিলা ইউনিয়নের জামছড়ি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মং পু মারমা অপহরণের এক বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পাই হ্লা অং মারমার সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মং ক্য চিং চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক লক্ষিপদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাশ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মং হ্নৈ চিং মারমা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিং তিং ম্যা মারমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী, বান্দরবান সদর ইউপি চেয়ারম্যান সা চ প্রু মারমা, রাজবিলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু মারমা, ছাত্রলীগ নেতা ম্যা সাইং নু মারমা, মং চ সিং মারমা  বক্তব্য ।

বক্তারা বলেন, সন্তু লারমাসহ জেএসএস নেতা-কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তাদের প্রশ্ন করুন জনসংহতি সমিতি পাহাড়ি কোন জাতির জন্য কি করেছেন। কার স্বার্থের জন্য তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজি করছে। পাহাড়ের উন্নয়নকে কেন তারা বাঁধাগ্রস্ত করছেন। পাহাড়ে উন্নয়ন হলে জাতি শিক্ষিত ও উন্নত হবে, এটা সন্তু লারমারা চান না কেন। অস্ত্রের ভয়ে আর মাথা নিচু করে থাকার কোন প্রয়োজন নেই। মং পু অপহরণের পর জামছড়ির প্রতিটি পরিবার এখন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। জামছড়ির মতো পাহাড়ের যেখানে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি সেখানে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। পাহাড়ের প্রত্যকটি এলাকা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলে সন্ত্রাসীরা বান্দরবানে স্থান পাবে না।

বক্তারা আরো বলেন, পাহাড়ে সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বীর বাহাদুরের বিকল্প নেই। বীর বাহাদুর সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। তিনি সব সময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পার্বত্য জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য বীর বাহাদুরকে আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী করার জন্য বক্তারা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সমাবেশে মং পু মেম্বারের অপহরণ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

সমাবেশের আগে নেতা মং পু মারমা অপহরণের এক বছর পুর্তি উপলক্ষে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ১৩ জুন রাতে মং পু মেম্বারকে জামছড়ির তার নিজ বাসা থেকে অস্ত্রের মুখে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

Exit mobile version