পাহাড়ে সাদা ভূট্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা
স্টাফ রিপোর্টার:
বর্তমানে বাংলাদেশে খাদ্যে অপ্রতুলতা নেই। খাদ্যের দিক থেকে স্বয়ং সম্পূর্ণ। তবে দেশে জনসংখ্যার হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ত্রিশ বছরেি এই সংখ্যা দ্বিগুন হতে পারে। এদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছেনা চাষের জায়গা। তাই ক্রমবর্ধমান মানুষের খাবার হিসেবে চাহিদা পূরণে সাদা ভূট্টা চাষ বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আর সাদা ভূট্টা চাষ বিপ্লব ঘটাতে পারে পার্বত্য অঞ্চলে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার এআরএফের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে বান্দরবান শহরের বালাঘাটা তুলা গবেষণা কেন্দ্রের হল রুমে মানুষের খাবার হিসেবে সাদা ভূট্টা প্রবর্তন সম্পর্কিত মাঠ দিবস ও ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে ও এগ্রেরিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এআরএফ) বাস্তবায়নে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোমাং রাজা চ প্রু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. কাজী মো. কমরুদ্দীন, এআরএফের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মো. জাফর উল্লাহ, ভাইস চেয়ারম্যান ড. মো. আলী আকবর, কৃষি গবেষক ড. আশরাফ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানের আগে ড. আব্দুল হামিদ, ড. কাজী মো. কমরুদ্দীন, প্রফেসার ড. মো. জাফর উল্লাহ, ড. মো. আলীসহ অন্যান্যরা সদর উপজেলার চড়ুই পাড়া, জয়মোন পাড়া, থোয়াইংগ্য পাড়া, বাকীছড়াসহ বেশ কয়েকটি সাদা ভূট্টা চাষের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে কেজিএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কাজী মো. কমরুদ্দীন বলেন, মানুষের খাবার হিসেবে সাদা ভূট্টা বাংলাদেশে বিশেষ অবদান রাখতে পারে। পরীক্ষামূলকভাবে বান্দরবানের সদর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় চাষ করা হয়েছে। এতে ফলনও ভালো হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় এর চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা গেলে মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি পোলট্রির ফিটের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
এআরএফের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল হামিদ বলেন, পরীক্ষামূলক গবেষণায় দেখা গেছে বিদেশি জাতের ভূট্টা পার্বত্য অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। এ জাতের ভূট্টা চাষে সারের তেমন বেশি প্রয়োজন পড়ে না। এই অঞ্চলে ভূট্টা চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা গেলে সমতলের মানুষের চাহিদাও পূরণে সক্ষম হবে।
তারা আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে হলুদ ভূট্টার চাষ হয়। হলুদ ভূট্টার চাহিদা মানুষের কাছে তেমন একটা নেই। উৎপাদনও তেমন একটা ভালো নয়। হলুদের তুলনায় সাদা ভূট্টা দেশের ও দেশের বাইরের মানুষের কাছে চাহিদা রয়েছে।
রাজা উ চ প্রু বলেন, এ এলাকার মানুষ অনেক পরিশ্রমি। চাষীদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, সার, বীজ দিয়ে সহযোগিতা করলে তারাও যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবে, তেমনি দেশের মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণে অবদান রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে আগত সদর উপজেলার চড়ুই পাড়ার সাদা ভূট্টা চাষী এনু মারমা জানান, তিনি এআরএফের সহযোগিতায় ৫৮শতক জায়গাতে সাদা ভূট্টা চাষ করেছেন। এই প্রথম তিনি বিদেশি কেএস ও পিএসসি জাতের এই ভূট্টা চাষ করেছেন। এতে তার ফলন বেশ ভালো হয়েছে এবং আর্থিকভাবে লাভবানও হবেন বলে জানান।
এদিকে স্থানীয়ভাবে ভোক্তাদের কাছে চাহিদা কম হওয়ায় চাষীদের মধ্য বাজার ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা কাজ করছে। উৎপাদন ভালো হলে কি হবে বাজার ব্যবস্থা আগে নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন চাষীরা। বাজার ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে চাষীরা আরো আগ্রহী হয়ে চাষের পরিমাণ বাড়াবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানে আগত গবেষক ও কর্মকতাবৃন্দদের কাছে। বাজার ব্যবস্থার নিশ্চিত করার বিষয়ে পরিকল্পনা আছে এমনটাই জানিয়েছেন কেজিএফ ও এআরএফের উর্ধতন কর্মকতা ও গবেষকরা।