টেকনাফে পুলিশকে কুপিয়ে ও গুলি করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা : নিহত ১

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে মাদক, অস্ত্র, মানিলন্ডারিংসহ ৭ মামলার এক আসামিকে গ্রেফতারের পর ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এসময় পুলিশের উপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন আসামির এক ভাই । যার বিরুদ্ধেও ৮ টি মামলা রয়েছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের ৩ সদস্যও।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিঠাপানিরছড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।

নিহত খোরশেদ আলম (২২) টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মিঠাপানির ছড়ার বাসিন্দা হাজী গোলাম হোসেনের ছেলে। এ সময় গ্রেফতার হয়েছে মাদক ও মানিলন্ডারিংসহ ৭ মামলার পলাতক আসামি ও নিহতের বড় ভাই শামসুল আলম প্রকাশ কালা শামসু (৩৫)।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন টেকনাফ থানার এএসআই রতন মিয়া, কনস্টেবল শফিকুল হক, কনস্টেবল বলরাম দাস। আহতরা টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ইয়াবা, অস্ত্র, মানিলন্ডারিংসহ ৭টি মামলার আসামি শামসুল আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশের একটি দল থানায় ফেরার পথে মিঠা পানিরছড়া বাজার এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের উপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ৩ টি গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটে। সেই সাথে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশকে কুপাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। এতে পুলিশের ৩ সদস্য আহত হন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। হামলাকারী পালিয়ে গেলে পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামিকে নিয়ে থানায় ফিরে আসে।

তিনি আরও বলেন, ‘পরে গ্রেপ্তার আসামির ছোট ভাই খোরশেদ আলম ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় বলে পুলিশ খবর পায়। নিহত খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধেও মাদক ও অস্ত্রসহ নানা অভিযোগে ৮ টি মামলা রয়েছে।’

তিনি জানান, দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় খোরশেদ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তবে সে কার গুলিতে মারা গেছে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটক শামসুল আলম একজন র্শীষ মাদক ব্যবসায়ী। তাদের দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাকারিয়া মাহমুদ বলেন, গুলিবিদ্ধ এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার বুকে বা পাশে গুলির আঘাত রয়েছে। তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে তার মৃত্যু হয়। আহত তিন পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের ভাই শাহীন আলম বলেন, মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের মিঠা পানিরছড়া বাজার এলাকায় তার ভাই খোরশেদ আলমসহ স্থানীয় যুবকরা মিলে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। এক পর্যায়ে তাদের বড় ভাই শামসুল আলমকে কয়েকজন অজ্ঞাত লোক বাড়ি থেকে একটি অটোরিকশায় (সিএনজি) তুলে টেকনাফের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।

তিনি বলেন, ‘এসময় খবর পেয়ে দেড় কিলোমিটার দূরে মিঠাপানিরছড়া বাজার এলাকায় গাড়িটি ধরার জন্য সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে শামসুলকে কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করলে গাড়ি থেকে গুলি করা হয়। পরে গাড়িটি তার ভাই শামশুল আলমকে নিয়ে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়। গাড়ি থেকে করা গুলিতে ছোট ভাই খোরশেদ আলম গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ওসি জানান মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, নিহত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন