পুলিশ প্রশাসনে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব পেলেন খাগড়াছড়ির এএসপি শামীম

fec-image

খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা ‍উপজেলার বাসিন্দা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন (শামীম) সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব বাংলাদেশ পুলিশ পদক প্রাপ্ত হয়েছেন। এতে খাগড়াছড়ির কৃতি সন্তান মো. আনোয়ার হোসেন (শামীম)-কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করার আনন্দ ছুঁয়ে গেছে খাগড়াছড়িবাসীকেও। শামীমকে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তারা। আবার অনেকে মন্তব্য করছেন, কর্মগুণে এই পুরস্কার তার আরো আগেই পাওয়া উচিত ছিল।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী উপলক্ষে ঢাকাস্থ রাজারবাগ পুলিশ লাইন প্যারেড গ্রাউন্ডে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনোয়ার হোসেনসহ খেতাবপ্রাপ্ত অন্যদের বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল পদক (বিপিএম) ব্যাজ পড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশের মহাপরিদশর্ক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা এএসপি আনোয়ার একসময় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার সেসময়ের সহকর্মী ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, এমন অমায়িক, বিনয়ী ও সৎ কর্মকর্তা শিক্ষা ক্যাডার ছেড়ে যখন পুলিশে যোগ দিলেন, তখন আমরা বলেছিলাম, সে ভিন্ন কিছু করবে। পুলিশে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতিভূ হবে। পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব বিপিএম পদক লাভের মাধ্যমে তার সেই মহান কর্মতৎপরতাই আসলে স্বীকৃত হলো। আমরা খুব খুশি এবং চাই তিনি পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহন করবেন।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন আমার খুব পরিচিত মুখ। সে অত্যন্ত সফলতার সাথে কর্মজীবন শুরু করেন। একজন চৌকস পুলিশ অফিসার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি মানবিক কাজেও অবদান রাখছেন। তারে এই প্রাপ্তিতে পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ স্কাউটস, খাগড়াছড়ি জেলা রোভারের সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী মো. দুলাল হোসেন পুলিশ পদকপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন শামীমকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তিনি সরকারি দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য যে মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন তা অতুলনীয়। পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এই প্রতিপাদ্যটির প্রকৃত উদাহরণ আনোয়ার হোসেন শামীম।

খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্সের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সুদর্শন দত্ত বাংলাদেশ পুলিশ পদকপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি কৃতি সন্তান আনোয়ার হোসেন শামীমকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভবিষ্যত কর্মজীবনের সফলতা কামনা করেন।

খাগড়াছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী চৌধুরী মোবাইল জোনের সত্ত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের জেলার একজন সন্তান প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এত বড় স্বীকৃতি পেল, এতে আমরা খুব খুশি। আমরা তাকে আরো উপরে দেখতে চাই। তিনি পুরো জেলার জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন।

কথা হয় এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীমের বাবা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পদক প্রাপ্তি খবরে আমরা খুশি। কিন্তু আমার প্রকৃত আনন্দ তখনই হবে, যখন দেখব সারাজীবন সে গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থাকছে। টাকা পয়সার প্রতি আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। ছেলেরা আমাকে কে কি দিলো, না দিলো- এটা নিয়েও কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। শুধু চাই, আমার সন্তানেরা যে যেই পেশায় থাকুক, যেন প্রকৃত মানুষ হয়ে বেঁচে থাকে। আজীবন মানুষের পাশে থাকে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন