পেকুয়ায় নিখোঁজের ১৪ দিন পর অপহৃত শিক্ষকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিখোঁজের ১৪ দিন পর অপহৃত শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের লাশ তার নিজ বাড়ির পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষকের বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা জানায়, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। এরপর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে শিক্ষকের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করার প্রক্রিয়া চলছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
শিক্ষক আরিফের ছোট ভাই রিয়াদ জানান, গত মাসের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে তাঁর বড় ভাই পেকুয়া সদরের চৌমুহনীতে অবস্থান করেছিল বলে বিভিন্নজনে তাদেরকে জানান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছে এবং মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ না পাওয়ায় থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলাও দায়ের করা হয়। শুক্রবার বিকালে তাদের বাড়ির পরিত্যক্ত পুকুরে বস্তাবন্দি অবস্থায় থেকে তার মেঝ ভাইয়ের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
জানা যায়, শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের বাড়ি পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মাতবরপাড়া এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের মরহুম বজল আহমদের ছেলে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর অহরণের পর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে তার পরিবার থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের পরিবারের সাথে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম গংদের মধ্যে জায়গা জমির বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘ দিন ধরে। সেই জায়গা দখলবেদখলের জের ধরে শিক্ষক আরিফকে অপহরণ করা হয়। অপহরণ করার পর অনেক খুঁজখবর নিয়েও পাওয়া যায় নি অবশেষে লাশ মিললো নিজ পুকুরে।
এদিকে লাশ উদ্ধারের পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর পিতা রমিজ আহমদের বসতবাড়ি দুইটি দ্বিতল ভবনে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে চৌমুহনীস্থ চেয়ারম্যানের ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. আজমগীর ওরফে আজমের মালিকানাধীন মার্কেটের দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষক আরিফের হত্যাকান্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবী জানিয়ে বলেন, আরিফ হত্যাকান্ড খুবই মর্মান্তিক। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। সরকার পতনের পর বিভিন্ন মামলা দিয়ে আমি ও আমার ভাইদের এলাকা ছাড়া করেছে। শুনলাম আজকে আমাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে, লুটপাট করেছে।