পেকুয়ার রাস্তা-ফুটপাত পরিষ্কার ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ার রাস্তা-ফুটপাত পরিষ্কার ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নেমেছে উপকূলীয় মুক্ত রোভার স্কাউটদল ও শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় পেকুয়া বাজার ও চৌমুহনী স্টেশনে দেখা যায় কেউ রাস্তা-ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার করছেন। কেউ সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন।

তবে এরা কেউ পরিচ্ছন্ন কর্মী বা ট্রাফিক পুলিশ নন। তারা সকলেই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এরপরও সৌন্দর্য বাড়াতে এবং সড়কের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন তারা।

আলাপকালে তারা জানায়, এরা সবাই ছাত্র। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর গত সোমবার দেশ ছেড়ে পালান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ অবস্থায় সড়কের শৃঙ্খলা নিশ্চিতে গতকাল সকাল থেকে মাঠে নামে ছাত্ররা। স্বেচ্ছায় তারা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নকর্মীরও দায়িত্ব পালন করেন। তাদের এ কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন সাধারণ লোকজন। একইসঙ্গে তাদের প্রশংসা করেন সবাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের প্রশংসা ভাসান অনেকে। কয়েক জায়গায় স্থানীয় লোকজন ও পথচারী তাদের খাবার ও পানি দিয়ে প্রকাশ করেন ভালোবাসা।

গতকাল বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্ররা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা যেখানে-সেখানে যাত্রীবাহী গাড়ি দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। কারো রাস্তা পার হতে সমস্যা হলে গাড়ি থামিয়ে পারও করে দেন। মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট না থাকলে পরবর্তীতে হেলমেট পরার পরামর্শ দেন। এছাড়া অনেক জায়গায় ঝাঁড়ু দিয়ে রাস্তাও পরিষ্কার করছিল তারা। পরিষ্কার করেন ময়লা-আবর্জনা।

এ বিষয়ে ছাত্ররা জানান, ‘লাখো ছাত্র–জনতার অর্জিত দেশ–রাখবো মোরা ক্লিন বাংলাদেশ’ স্লোগানে তারা গতকাল থেকে সড়ক পরিষ্কার ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম শুরু করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভাঙচুর

বিভিন্ন দোকানের মালামাল পুড়া, কাচঁ ভাঙ্গা, যেখান সেখানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়েছিল ভাঙা কাঁচের টুকরো। সাথে ছিল ছোটো–বড় অসংখ্য ইটের টুকরো। গতকাল তা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে ছাত্রদের।

এতে অংশ নেয়া সাধারণ একজন ছাত্র বলেন, এ এলাকাটা আমাদের। তাই আমরা সুন্দর করে সাজাব। যাদের উপর সুন্দর রাখার দায়িত্ব ছিল তারা পালিয়ে গেছে। তাই আমাদের বসে থাকার সুযোগ নেই।

এসময় শিল্পী পারভেজ নামের এক পথচারী বলেন, ছাত্ররা তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। এতে তারা তাদের শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে। এখন তারা রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা সবকিছু সুন্দরভাবেই ম্যানেজ করছেন।

উপকূলীয় মুক্ত রোভার স্কাউটদলের দল নেতা ছাদেক বলেন, এখানে ময়লা আর্বজনা স্তূপ করে ফেলছে আমরা এসব পরিস্কার অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা শিক্ষার্থী চাইলে দেশ স্বাধীন করতে পারি কোন স্বৈরশাসককে দেশ ত্যাগ করাতে পারি।

কক্সবাজার সিটি কলেজের শিক্ষার্থী সালমান সাকি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভাঙচুর করা বিভিন্ন দোকানের মালামাল পোড়া, কাঁচ ভাঙা, যেখান-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল ভাঙা কাঁচের টুকরো। এসব আমরা সকলে পরিষ্কার করছি। এদেশ আমাদের কোন স্বৈরশাসক বেশি দিন ঠিকতে পারেন নাই হাসিনাও ঠিক একই। শিক্ষার্থীরা চাইলে সব পারে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন