parbattanews

পেকুয়ায় জমে উঠেছে ইউপি নির্বাচন

nl
নিজস্ব প্রতিনিধি :
পেকুয়ায় আসন্ন ইউপি নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। দিন দিন প্রচার প্রচারণা বেড়ে যাচ্ছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই প্রচারণা বাড়িয়ে দিয়েছে প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায়।

পুরো পেকুয়ার আনাচে কানাছে ছেয়ে গেছে পোষ্টার ও ব্যানার। দুপুর ২ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত চলে প্রার্থীদের মাইকিং প্রচারণা। এমন কি হাউজ ক্যাম্পিয়ংও জমে উঠেছে বেশ। ভোটারদের ধারে ধারে গিয়ে প্রার্থীরা এবং প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।

প্রার্থীরা ভোটারদের ধারে ধারে গিয়ে ভোটারদেরকে ভোট দেওয়ার জন্য ওয়াদাবদ্ধ করছেন। সে সাথে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করার জন্য ভোটারদের কাছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে এসেছে প্রার্থীদের আরামের ঘুম দিন দিন হারাম হয়ে যাচ্ছে।

চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রে আলোচনার ঝড় ভয়ে যাচ্ছে প্রার্থীদের নিয়ে। এবারের প্রার্থীদের মধ্যে কে বেশি জনপ্রিয় এবং মানুষের দূরদিনে কে বেশি মানুষের পাশে থাকবে সেই সব প্রার্থীকে খুজছে পেকুয়াবাসী। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ২য় ইউপি নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার মধ্যে ৩১ মার্চ পেকুয়ার ৭টি ইউপি নির্বাচনে অনুষ্টানের দিন নির্ধারিত হয়।

পেকুয়া উপজেলার ৭টি ইউপি নির্বাচনে বি এন পি, আ’লীগ জামাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু অন্য দলের প্রার্থীরা জাতীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও জামাত তাদের দলীয় প্রতীক দাড়িপাল্লা দিয়ে নির্বাচন করতে না পারায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তারা তাদের নিজ নিজ পরিচয় এবং জনপ্রিয়তা তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।

অপর দিকে অন্য প্রার্থীরা তাদের দলের পরিচয় এবং দলের একক প্রার্থী পরিচয় দিয়ে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। আবার কয়েকজন বি এন পি এবং আ’লীগ সমর্থিত লোকজনও দলের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলার ৭টি ইউপিতে আ’লীগ ও বি এন পির প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নে আ’লীগের মনোনীত একক প্রার্থী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট কামাল হোসেন (নৌকা), বি এন পির মনোনীত একক প্রার্থী উপজেলা বি এন পির সভাপতি ও সফল ইউপি চেয়ারম্যান দুখী মানুষের আপনজন খ্যাত এম বাহাদুর শাহ(ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে শাহ আলম(আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনিত প্রার্থী নাছির উদ্দিন (হাতপাখা)। জরিপ অনুসারে পেকুয়াতে আ’লীগ প্রার্থী ও বি এন পির প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

রাজাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতীক নিয়েছেন ৮ জন। তারা হলেন, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন সিকদার (ধানের শীষ), আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী শাহাব উদ্দিন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনিত প্রার্থী হেলাল উদ্দিন (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আবসার বধু (টেলিফোন), সৈয়দ নূর (আনারস), শামশুন্নাহার (রজনী গন্ধা), হুমায়ূন কবির (চশমা)। বি এন পির প্রার্থী ও আ’লীগ প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি হবে।

টইটং ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছেন ৪ জন। তারা হলেন বিএনপি মনোনিত প্রার্থী রমিজ উদ্দিন আহমদ (ধানের শীষ), জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আ’লীগ সমর্থিত শহিদুল্লাহ বিএ (ঘোড়া), হাসান শরীফ চৌধুরী (আনারস)। জরিপে দেখা যায় বি এন পির প্রার্থী আ’লীগ সমর্থিত শহিদুল্লাহ মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

শিলখালী ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছে ৪ জন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী কাজিউল ইনসান (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী নুরুল হোছাইন (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ (লাঙ্গল), জাহেদুল করিম (আনারস)। বি এন পির প্রার্থী ও আ’লীগ প্রার্থী প্রতিযোগিতা হবে।

বারবাকিয়া ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছে ৪ জন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী জিএম কাশেম (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী শহিদুর রহমান ওয়ারেচী (লাঙ্গল), মওলানা বদিউল আলম জিহাদী (চশমা)। এখানে বি এন পির প্রার্থী এবং আ’লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউল আলম জিহাদীর মধ্যে ত্রিমূখী লড়াই হবে।

উজানটিয়া ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছে ৪ জন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী এটিএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী মিন্টু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী দেলওয়ার করিম চৌধুরী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল হক আজু (আনারস)। বি এন পির প্রার্থী ও আ’লীগ প্রার্থীর লড়াই হবে।

মগনামা ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছে ৪ জন। তারা হলেন, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম (ধানের শীষ), আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী খায়রুল এনাম (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী ইউনুস চৌধুরী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী (আনারস)। বি এন পির প্রার্থী ও আ’লীগ প্রার্থীর মধ্যে মর্যাদার লড়াই হবে।

তবে প্রার্থীরা এখনো আতংকিত আসলে কি নির্বাচন সুষ্টু হবে কি না সেটা নিয়ে। এ নিয়ে শংক প্রকাশ করেছেন অনেক প্রার্থী। এ সরকার আমলে উপজেলা নির্বাচন থেকে শুরু করে সিটি নির্বাচনের মতো ভোট জালিয়াতি এবং জোরপূর্বক ভোট আদায়, ভোট কেন্দ্র দখল নিয়ে ভোট তাদের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নিয়ে যাচবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করছেন অন্য প্রার্থীরা। পেকুয়ার ৭টি ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র চি‎হ্নিত করে প্রার্থীরা শঙ্কা  প্রকাশ করে স্ব স্ব রিটানিং অফিসার বরাবর আবেদন করছেন বলে সূত্রে জানা যায়। এসব ঝুকি পূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ভোটার ও ভোট গ্রহনের নিরাপত্তা নেই বলেও জানা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খাঁন জানান, নির্বাচন সুষ্টুভাবে অনুষ্টানের জন্য প্রশাসন প্রস্তুত।

Exit mobile version