parbattanews

পেকুয়ায় পুকুরে বিষ ঢেলে মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

কক্সবাজারের পেকুয়ায় পুকুরে বিষ ঢেলে বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল পরিমান মাছ হত্যা করা হয়েছে। এসব মাছের বাজারমুল্য প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা বিষ ঢেলে এসব মাছ মেরে ফেলা হয়েছে।

এদিকে মাছের দুর্গন্ধে আশে পাশের পরিবেশ ভারি হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ারা বলছেন শুধু মাছ হত্যা করা হয়নি। হত্যা করা হয়েছে একটি অসহায় পরিবারের সুন্দর স্বপ্ন। জানাগেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামে মরহুম এড, ফিরোজ আহমদ চৌধুরী জামে মসজিদ পুকুরে গত তিন বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছেন রাজাখালী ইউনিয়নের বদিউদ্দিন পাড়ার মোসলেম আহমদের ছেলে কামাল হোসেন। মসজিদ পরিচালনা কমিটির পরিচালক মৌলভী আবুল বশরের কাছ থেকে বর্গা নিয়ে তিনি ওই পুকুরে রুই, কাতাল, তেলাপিয়া, মৃগেল, পাঙ্গাস কার্পোসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন।

মাছের মালিক কামাল হোসেন জানায়, পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে তিনি লীজ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করছেন। পরিবার নিয়ে মিয়াপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। মাছগুলি বিক্রি উপযোগী হয়ে উঠেছে। আগামী এক মাসের মধ্যে মাছ বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। গভীর রাতে কে বা কারা পুকুরে বিষ ঢেলে প্রায় দুই লক্ষ টাকার মাছগুলি মেরে ফেলেছে। আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। আমাকে পথে বসিয়েছে।

স্থানীয় ইব্রাহিম, শাহাব উদ্দিন, নুরুল আলম, ময়ুরা বেগম জানায়, মানুষের সাথে মানুষের শত্রুতামি থাকতে পারে। কিন্তু মাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা। মানুষ কত হিংস্র হতে পারে। কামাল হোসেন একজন অসহায় ও দরিদ্র লোক। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তিনি মাছ চাষ করছিলেন। তার কোন শত্রু ছিলনা। এরপরেও মানুষ এত জঘন্য কাজ কিভাবে করতে পারে। বেচারার কপালে এখন হাত উঠেছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরে বিপুল পরিমান বিভিন্ন জাতের মরা মাছ পানিতে ভাসছে। বিষের তীব্রতায় শুধু মাছ মারা পড়েনি। কাঁকড়া, তলদেশের পোকামাকড়ও মারা পড়েছে। পুকুরপাড়ে তুলে রাখা হয়েছে সারি সারি মরা মাছ। আর মাছের পাশে বসে মাথায় হাত দিয়ে বিলাপ করছে কামাল হোসেনের স্ত্রী। তার কান্না দেখে দেখতে আসা অনেক নারী পুরুষও কাঁদছে। মাছের দুর্গন্ধে আশে পাশের পরিবেশ ভারি হচ্ছে।

পেকুয়া থানার ওসি সাইফুল ইসলাম মজুমদার জানায়, এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version