parbattanews

পেকুয়ায় প্রবহমান খালে বাঁধ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৎস্য ঘের

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ছিরাদিয়া এলাকায় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রবহমান খালে কয়েকটি অবৈধ বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অবৈধ মৎস্য ঘেরে সমুদ্রের লোনা পানি ঢুকিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করায় এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। বাঁধের কারণে খালের পানি বের হতে না পারলে বর্ষায় পেকুয়া সদরে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রবল বন্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধের কারণে এলাকার মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

জানা যায়, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বিলাহাছুরা ছিরাদিয়া এলাকার ‘মানার বাপের খাল’ নামের প্রবহমান খালটি প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা। এটি প্রবহমান সরকারি খাল। এই খাল দিয়ে বর্ষায় পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বৃষ্টি ও বন্যার পানি সমুদ্রের দিকে বের হয়ে যায়। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম ছিরাদিয়া এলাকার আজম খান নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে কিছু স্বার্থান্বেষী লোক ওই প্রবহমান খালে কয়েকটি অবৈধ বাঁধ দিয়ে বেশ কয়েকটি মৎস্য ঘের করেন। এ কারণে গত কয়েক বছর পেকুয়া সদর ইউনিয়নে পানি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। বর্ষার সময় বৃষ্টি ও বন্যার পানি বের হতে না পেরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা দেখা দেয়। এতে কৃষকের আমন চাষ, গ্রামীণ অবকাঠামো ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতিসহ পেকুয়া সদর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মইয়াদিয়া এলাকার কৃষক ফিরোজ আহমদ জানান, আজম খানদের দেওয়া ওই অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দিয়ে প্রবাহমান খালটি খুলে দিয়ে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক পৃথকভাবে সংশ্লিষ্টরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত বছর এই খালের অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দেওয়ার জন্য পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি আদেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে অবৈধ বাঁধগুলো এখনও কেটে দেওয়া হয়নি। অবৈধ মৎস্য ঘেরের লোনা পানির কারণে পুরো এলাকায় এখন দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। গবাদি পশু, পাখি, হাঁস মুরগি পানি খাওয়ার সুপেয় পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। গাছপালাও বিবর্ণ হয়ে গেছে। এতে পুরো এলাকা দুষিত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকার শত শত নারী পুরুষ বিলাহাছুরার মইয়া দিয়া স্টেশনে বাঁধগুলো কেটে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ওই বাঁধগুলো নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

অভিযুক্ত আজম খান স্বীকার করে বলেন, ওই খাল দিয়ে এখন আর পানি বের হয় না। তিনি বলেছেন ওই মৎস্য ঘেরগুলেতে আমি একা নয়, অনেকই আছেন। তারা এই মৎস্য ঘের দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান, আমি বুধবার বিকালে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে পরির্শন করে দেখেছি। আমি তাদের নিয়ে বসেছি বর্ষার অতিবৃষ্টিতে ওই বাঁধ কেটে দিতে বলেছি।

Exit mobile version