পেকুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি, আহত ৪
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের ৩ জন কর্মীসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পেকুয়া চৌমুহুনী কলেজ গেইট এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চকরিয়া, পেকুয়া, বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩ সদস্য ও ২ দোকান কর্মচারীসহ ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া চৌমুহুনী কলেজ গেইট এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের গ্যাসের দোকানে গ্যাসের চুলা মেরামত করার সময় সিগারেটের আগুনে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। প্রায় চার ঘণ্টা আগুনে সানলাইন কাউন্টার, রিয়াজের গ্যাসের দোকান, জাফরের মুদির দোকান, শাহ আলমের কুলিং কর্নারসহ বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে গেছে। এসময় আহত হলেন— মো. বাদশা ও মো. মিজবাহ, হাসনাত। আহত ফায়ার সার্ভিস কর্মী শফিউল, বাকিদের নাম এখনও জানা যায়নি।
এদিকে স্থানীয়রা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এবং যুবলীগ নেতা আজম বলেন, বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে আগুন জ্বলে উঠলে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসের পেকুয়া ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। তারা গাফিলতি করে আসতে আসতে দেরি করায় আগুন আরো বেড়ে যায়। তারা এসে পাম্প মেশিনটি পুকুরে লাগালে তাও পানি উঠে না। এসময় আগুনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফায়ার সার্ভিসের চকরিয়া ও বাঁশখালী ইউনিটের সহযোগিতা চাইলে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডস্থলে এসে অনেকক্ষণ চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তারা আরো বলেন, ফায়ার সার্ভিস পেকুয়া ইউনিটে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় পেকুয়ায় কোথাও অগ্নিকাণ্ড হলে সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে না। পেকুয়া ইউনিটকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সরঞ্জাম দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন। ইতিপূর্বে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের পুকুরে এক স্কুল ছাত্র গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীরা উপস্থিত হয়েও জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি। দমকলকর্মীদের অভিযোগ পেকুয়ায় পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।
যুবলীগ নেতা আজম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীরা জীবন বাজি রেখে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে জোর চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসের চকরিয়া ইউনিট এসে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বাঁশখালী ও চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, এডিসি মো. আমীন আল পারভেজ, পুলিশ সুপার মাহাফাজুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা, চকরিয়া পেকুয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল তফিকুল আলম, পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ফরহাদ আলী, তদন্ত ওসি তাজউদ্দীন, চকরিয়া থানার ওসি সহ পেকুয়া থানার পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা এবং ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণ।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা বলেন, দোকানে তেল ও গ্যাস একসঙ্গে বিক্রি করে। গ্যাসের চুলা লাগানোর সময় এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে ৫ জন আহত হয়েছেন। এক কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মী অনেক চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত অগ্নিকাণ্ডস্থলে এসেছি। তাদের সহযোগিতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।