পেকুয়ায় সিএনজিতে তুলে নিয়ে গেল প্রবাসীর স্ত্রীকে

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সিএনজিতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেল এক প্রবাসীর স্ত্রীকে। প্রায় ৩০ ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুন্দরী গৃহবধূর খোঁজ পাওয়া যায়নি। মীম মণি নামক ৩ বছর বয়সী এক কনে শিশুও মায়ের সঙ্গে ছিল। মা ও মেয়ে ২ জনেই নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ২টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়া ষ্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ গৃহবধূর নাম সেলিনা আক্তার (৩২)। তিনি রাজাখালী ইউনিয়নের টেকঘোনাপাড়া গ্রামের প্রবাস ফেরত মাহাবুল আলমের স্ত্রী। পেকুয়া থানা পুলিশ ওই দিন রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে নিখোঁজ গৃহবধূ সেলিনা আক্তারের স্বামী পেকুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী রেকর্ডের জন্য লিখিত আবেদন পৌঁছান।

স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই দিন বিকেল ২ টার দিকে মাহাবুল আলমের স্ত্রী সেলিনা আক্তার চিকিৎসা নিতে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হন। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন বারবাকিয়ার নোয়াখালীপাড়া ষ্টেশনে পল্লী চিকিৎসক শাহাদাতের চেম্বারে যান। এ সময় তার সঙ্গে মেয়ে মীম মনি (৩) ও প্রতিবেশী ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী মুন্নি আক্তারও সেলিনার সাথে ছিল।

সুত্র জানায়, শাহাদাতের চেম্বার থেকে গৃহবধূ সেলিনাকে একটি সিএনজিতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তবে এ নিয়ে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। একটি সুত্র জানায়, সেলিনা আক্তার ও প্রতিবেশী মৃত বাদশাহ মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোছাইনের মধ্যে বৈবাহিক জীবনের অনেক আগে থেকে গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে সেলিনার পিতা রাজাখালী ইউপির সাবেক মেম্বার শাহ আলম মেয়েকে প্রবাসী পাত্র মাহাবুল আলমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করান। শাহাদাত প্রেমের সম্পর্কে ব্যর্থ হয়ে বিদেশে পাড়ি দেন। সে সময় থেকে শাহাদাত ও সেলিনার মধ্যে ঠিকই সম্পর্ক গোপনে চলছিল।

শাহাদাত ১০/১২ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার সংসারে ৩ টি ছেলে মেয়ে রয়েছে। অন্যদিকে মাহাবুল আলম ও সেলিনা আক্তার দম্পতির সংসারেও ৩ ছেলে মেয়ে রয়েছে। গত ২০ দিন আগে সেলিনার সাবেক প্রেমিক শাহাদাত দেশে ফিরে। ওই দিন শাহাদাতই প্রেমিকা সেলিনা আক্তারকে নিয়ে সিএনজি যোগে নিরুদ্দেশ হয়। সেলিনার স্বামী মাহাবুল আলম জানান, আমার স্ত্রী ও মেয়েকে জোরপূর্বক টানা হ্যাঁচড়া করে গাড়িতে তুলে অপহরণ করা হয়েছে। অপরদিকে শাহাদাত হোছাইনের বড় বোন রেহেনা বেগম জানান, সেলিনা ও শাহাদাত ২ জনই কুমারী থাকতে প্রেমের গভীর সম্পর্কের মধ্যে ছিল। অনেক কাহিনী। শাহ আলম মেম্বার মেয়েকে প্রবাসী পাত্র মাহাবুল আলমের নিকট বিয়ে দেয়। কিন্তু এ ২ জনের প্রেম অক্ষত থেকে যায়। আমার ভাইয়ের ৩ ছেলে ও স্ত্রীর জীবন সর্বনাশ হয়ে গেছে। সেলিনা আক্তার উত্তম সুন্দরী।

শাহাদাত হোছাইনের বড় ভাই স্থানীয় সমাজ সর্দার হাজী মুজিবুর রহমান জানান, আমার ভাই ও সেলিনার প্রেমের কথা এখানে সবাই জানে। তারা প্রেম ভালবাসার টানে উধাও হয়েছে। স্থানীয় ইউপির সদস্য বাদশাহ জানান, আসলে এদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। মাহাবুল আলম একজন অত্যন্ত সৎ চরিত্রবান ও প্রশংসনীয় ছেলে। তার এ অবস্থায় আমরা গভীর চিন্তিত হয়ে গেছি। শাহাদাতও ভাল ছেলে। কেন এমন করল আসলে চিন্তার বিষয়।

পল্লী চিকিৎসক শাহাদাত হোছাইন জানান, সেলিনার কোমরে ব্যথা ছিল। তার স্বামী মাহাবুল আলম মুঠোফোনে কথা বলে আমার চেম্বারে পাঠিয়েছিলেন। একটি শিশু ও আরেকজন কিশোরী মেয়েও ছিল। চিকিৎসার পর এখান থেকে তারা চলে গিয়েছিল। এরপর জেনেছি গৃহবধূ সেলিনাকে সিএনজিতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পেকুয়া থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার জানান, ওই মহিলার বিষয়টি আমি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মহিলাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পেকুয়া, প্রবাসী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন