parbattanews

প্রকাশিত উপবৃত্তির তালিকা সরিয়ে নেওয়ায় মানিকছড়িতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভ

000-1-copy

মানিকছড়ি প্রতিনিধি:

মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপবৃত্তির তালিকা সম্প্রতি বাছাই কমিটি কর্তৃক চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে! ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের একক কর্তৃত্বে ওই তালিকা রদ-বদলের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভ্রান্তিসহ বঞ্চিত এতিম, প্রতিবন্দ্বি ও হত-দরিদ্র শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কলেজ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ৮ শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৪শতাধিক আবেদনকারী থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপবৃত্তি নিশ্চিত করতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাছাই কমিটি কর্তৃক যাছাই-বাছাই শেষে ১ অক্টোবর তা অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রাথমিক অনুমোদিত তালিকায় আবেদনকারীর মধ্যে ছাত্রের ১০% এবং ছাত্রীর ৪০% কোটা অনুসরণ করে প্রিন্সিপালের একক সুপারিশে ২০ জনসহ বাছাই কমিটির সিদ্বান্তে ১৫৮ জনের তালিকার কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীরা ছবি ও ব্যাংকিং হিসাব খুলেতেও শুরু করেন।

কিন্তু এ সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই প্রিন্সিপাল কাউকে না জানিয়ে একক কর্তৃত্ব (ক্ষমতা) বলে ২ অক্টোবর পূর্বের তালিকা নোটিশ বোর্ড থেকে সরিয়ে নেন! ফলে দেখা দেয় বিপত্তি। শিক্ষার্থীরা মোবাইল হিসাব খুলে কলেজে এসে দেখেন বোর্ডে তাদের নাম নেই।

নাম না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারীরা শিক্ষার্থীদেরকে জানান যে, পূর্বের তালিকায় রদ-বদল হবে মর্মে প্রিন্সিপাল তা সরিয়ে ফেলতে বলেছেন! এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তালিকার এতিম, প্রতিবন্ধি ও হত-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িযে পড়ে।

মঙ্গলবার সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকছড়ির সংবাদকর্মীরা কলেজে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, উপবৃত্তির নিয়ম অনুযায়ী আমরা আবেদন করেছি। বাছাই কমিটি চুল-চেরা বিশ্লেষণ করে চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। আমরা অনেকে মোবাইলে হিসাবও খুলেছি। কিন্তু আজ কলেজে এসে জানতে পারি পূর্বের তালিকা বাতিল করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাছাই কমিটির জনৈক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী উপবৃত্তির আবেদন বাছাই কমিটির আহ্বায়ক (প্রিন্সিপাল)সহ আমরা ৩ জন ব্যাপক যাছাই-বাছাই শেষে প্রিন্সিপালের একক ক্ষমতায় ২০ জনসহ ১৫৮ জনের তালিকা প্রকাশ করি। কিন্তু পরক্ষণে প্রিন্সিপাল নিজেই কেন তা বোর্ড থেকে সরিয়ে ফেলতে বলেছেন তা আমরা কেউই জানিনা।

অন্য একটি সূত্র বলছেন প্রিন্সিপাল তালিকায় বেশির ভাগ উপজাতি ছেলে-মেয়েদের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে গোপনে আরেকটি তালিতা প্রস্তুত করতে কাজ করছেন! যা কলেজের শান্ত পরিবেশে অশান্তির সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।

এ প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মংচাইঞো মারমা সাংবাদিকদের জানান, পূর্বের তালিকায় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবিদের ছেলে-মেয়েরা অর্ন্তভূক্ত হয়েছে এবং হত-দরিদ্র ও এতিমরা বাদ পড়েছে। তাই সেটিতে রদ-বদল করার জন্যই পূর্বের তালিকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অচিরেই তা হালনাগাদ করে প্রকাশ করা হবে, কোন অনিয়ম কিংবা ত্রুটি হতে দেবো না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার যুথিকা সরকার বলেন, উপবৃত্তির তালিকা  প্রস্তুতের ব্যাপারে আমার সাথে অধ্যক্ষের কোন আলোচনা হয়নি। কেন বাছাই কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা স্থগিত করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো।

Exit mobile version