কুনমিংয়ে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

প্রতিবেশীদের দিকে নিবিড় নজর রাখি :জয়সওয়াল

fec-image

কুনমিংয়ে পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঢাকার ‘ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের’ প্রশ্নে নয়াদিল্লি বলেছে, আশপাশে কী ঘটছে, সেদিকে তাদের ‘নিবিড় নজর’ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কের আলাদা ভিত্তি রয়েছে, কিন্তু ‘পরিবর্তিত প্রেক্ষাপট’ সেই সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত ১৯ জুন চীনের কুনমিং শহরে পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তৌহিদ হোসেন যে ব্রিফিং করেন, সেখানেও ওঠে প্রসঙ্গটি।

রণধীর জয়সওয়ালকে উদ্দেশ করে দ্য হিন্দুর সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চীন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে কি আপনার কোনো মন্তব্য আছে?

কারণ বৈঠকের পর তারা বলেছে যে, একাধিক বিষয়ে তাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। জবাবে জয়সওয়াল বলেন, দেখুন, আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নিবিড় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সেই সম্পর্ক বিচার করার সময় আমরা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটও বিবেচনায় নিয়ে থাকি।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চান গৌতম লাহিরি নামের এক সাংবাদিক। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফে কোনো যোগাযোগ করা হয়েছে কিনা? জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে যেসব বিষয়ে পরিবর্তন আনতে বলা হয়েছে, সেগুলো ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই নির্ধারিত। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় আছি।

গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে, ২০২৬ সালে সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এই চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কিনা, জয়সওয়ালের কাছে সেই প্রশ্ন তোলেন এবিপির সাংবাদিক অগ্নি রায়।

জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ গঙ্গাসহ একে অপরের সঙ্গে ৫৪টি নদীর পানি ভাগাভাগি করি। আর এসব নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন রয়েছে।

ব্রিফিংয়ে ঢাকার খিলক্ষেতে ‘মন্দির অপসারণের’ একটি অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান গৌতম লাহিরি। জবাবে জয়সওয়াল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, কট্টরপন্থিরা সেখানে একটি মন্দির ভাঙার দাবি তুলেছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে উল্টো অবৈধ জমি ব্যবহারের যুক্তিতে সেটি ভাঙার অনুমতি দিয়েছে। আমরা অত্যন্ত হতাশ যে বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, সেখানের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সম্পদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন