প্রত্যাশা ছাড়াই চমকে দিল ‘গুড পার্টনার’

fec-image

‘গুড পার্টনার’ নিয়ে খুব একটা প্রত্যাশা ছিল না। কারণ দুটি; এক. সিরিজের লেখক আনকোরা। দুই. গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে ‘ডিভোর্স অ্যাটর্নি শিন’ কিংবা ‘ক্যান আই বি সামওয়ান ইলস?’-এর মতো ড্রামাও দর্শকের মধ্যে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি।

ফলে ‘গুড পার্টনার’ নিয়েও প্রত্যাশার ঝুঁকি নেননি দর্শকেরা। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন, এটি নির্ঘাত ফ্লপ করবে। তবে মুক্তির পর সব হিসাব-নিকাশ উল্টে গেছে। কোরীয় তরুণ দর্শকেরা ড্রামাটি লুফে নিয়েছেন। কোরিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে ড্রামাটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

গত ১২ জুলাই থেকে কোরীয় টেলিভিশন এসবিএসে প্রচারে এসেছে ‘গুড পার্টনার’। টেলিভিশনে দর্শকপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে ভিউয়ারশিপ রেটিং দেওয়া হয়। এটি মাত্র ৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভিউয়ারশিপ রেটিং নিয়ে প্রচারে আসার বর্তমানে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ রেটিং অর্জন করেছে।

১৬ পর্বের ড্রামাটি এখনো শেষ হয়নি। দর্শক যে হারে বাড়ছে, তাতে শেষ হওয়ার আগে এই রেটিং ২০ শতাংশেও ঠেকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।

এই ড্রামার গল্পে নতুনত্ব ও আধুনিকতার ছাপ রয়েছে। গল্পের জোরেই ড্রামাটি তরুণ দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে। সন্তানদের কথা বিবেচনা করে, পারস্পরিক বোঝাপড়াকে অটুট রেখে কীভাবে দাম্পত্যজীবনে ইতি টানা যায়, সেটা নিয়ে এগিয়ে যায় `গুড পার্টনার’-এর গল্প।

বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে গল্পে নারীকে বরাবরই নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়। গৎবাঁধা গল্পের বাইরে গুড পার্টনার-এ নারীকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ড্রামার গল্প আবর্তিত হয়েছে চা ইউন কিয়োং নামের একজন তারকা আইনজীবীকে ঘিরে। যিনি ১৭ বছর ধরে আইন পেশায় রয়েছেন। বিবাহবিচ্ছেদ–সংক্রান্ত মামলার জন্য আলাদাভাবে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। এ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারকা অভিনেত্রী জাং না রা।

জাং না রার কনিষ্ঠ আইনজীবী হান ইউ রি চরিত্রে দেখা যাবে তরুণ অভিনেত্রী নাম জি হিয়োনকে। তিনি বলেন, ‘ড্রামার চিত্রনাট্যটি পড়ার সময় আমার মাথায় গল্প গেঁথে গেছে। এমন একটা গল্প একজন লেখকের পক্ষেই রচনা করা সম্ভব।’

কর্মক্ষেত্রে জাং না রা ও নাম জি হিয়োনের দ্বন্দ্বকে যুক্তিসংগতভাবে তুলে এনেছেন নির্মাতা কিম গা রাম। কোরিয়ার পপ কালচার সমালোচক জাং ডাক হিয়োন বলেছেন, ‘দুই চরিত্রের মূল্যবোধের দ্বন্দ্বের মাধ্যমে এই সময়ের কর্মক্ষেত্রের দ্বন্দ্বকে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

চিত্রনাট্য লিখেছেন চোই ইউ না। চোই নিজেও একজন আইনজীবী ছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চিত্রনাট্য লিখেছেন। দিনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন, রাতে গল্প বুনেছেন। এটি প্রযোজনা করেছে স্টুডিও অ্যান্ড নিউ। সিবিএসের পাশাপাশি নেটফ্লিক্সসহ একাধিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মেও ড্রামাটি প্রচারিত হচ্ছে।

কোরিয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে হরেদরে ড্রামা নির্মিত হয়। গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে দুটি ড্রামা সাড়া না ফেললেও আলাদা দর্শক রয়েছে। মূলত সেটাই প্রমাণ করেছে গুড পার্টনার।

একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী বলেন, ‘মধ্যবয়সী দর্শকদের ধরতে টেলিভিশনগুলো বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে নতুন নতুন কাজ করছে।’

সূত্র: দ্য কোরিয়া টাইমস

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন