parbattanews

প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের ঘটনাস্থল পরিদর্শন

কক্সবাজার প্রতিনিধি”

উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মো. শফিরবিল পাটুয়ারটেক এলাকায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দেবর-ভাসুরেরা সুপারী গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় উখিয়া থানা ও ইনানী ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান ও ইনানী ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ সোমবার(২০ আগস্ট) বেলা ১২টায় আলোচিত প্রবাসীর স্ত্রীকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এসময় পুলিশ নির্যাতিত প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশার সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা ও নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (নিরস্ত্র) মো. আনিছুর রহমান জানান, প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দেবর-ভাসুর কর্তৃক সুপারী গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে রাত ভর নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় ইতিমধ্যে নির্যাতিত গৃহবধুর ভাই আবুল শামা বাদী হয়ে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যূনাল নং-৩ এ মামলা দায়ের করেছেন। তাই ট্রাইব্যূনাল বিচারাধীন বিষয়ে আদেশ ব্যতীত পুলিশ কোন হস্তক্ষেপ করতে বা পদক্ষেপ নিতে পারে না। প্রবাসীর স্ত্রী নির্যাতিত নুর আয়েশাকে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা ও নিরাপত্তা দিতে পুলিশ আন্তরিক ভূমিকা রাখবে।

গেল ১৬ আগস্ট নির্যাতিত গৃহবধু স্থানীয় হামিদুর রহমানের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী বদি আলমের স্ত্রী নুর আয়েশা (৩০) কে তার লম্পট দেবর হামিদুর রহমানের অপর ছেলে মো. আলম (৩০) ধর্ষণের উদ্দেশ্যে গভীর রাত সাড়ে ৩টায় ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে প্রবাসীর স্ত্রীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে লম্পট মো. আলম পালিয়ে গিয়ে তার চাচাত ভাই একই এলাকার মৃত উবায়দুর রহমানের ছেলে খলিল আহমদ (৪০) এবং অপর দুই সহোদর ভাই হামিদুর রহমানের ছেলে মো. করিম (২৫) ও ইসহাক আহমদ (৪২) কে নিয়ে পুণরায় প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ঢুকে পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী নুর আয়েশাকে টানা-হেচঁড়া করে ঘর থেকে বের করে ভিটের সুপারী গাছের সাথে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও নির্যাতন শুরু করে। গাছের সাথে হাত-পা বাঁধা প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশার উপর দেবর-ভাসুরদের এই নির্মম নির্যাতন ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত প্রকাশ্যেই চলে।

এসময় আক্রান্ত নূর আয়েশা ও তার অবুঝ ৩ শিশু সন্তানের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রবাসীর স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এক পর্যায়ে নির্যাতিত প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশা রক্তাক্ত ও অজ্ঞান হয়ে পড়লে এবং এলাকাবাসী ক্ষোভে প্রতিরোধ-প্রতিবাদ করতে শুরু করলে ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি একই ভাবে কুমিল্লায় পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে শালিসী বৈঠকে দেবর-ভাসুর কর্তৃক এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। কুমিল্লার আলোচিত সেই প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের চেয়েও নির্মম ও বর্বর নির্যাতন চলে উখিয়ার পাটুয়ারটেক গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশার উপর। বিলম্বে হলেও ১৯ আগস্ট গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশের টনক নড়ে।

Exit mobile version