parbattanews

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম

পেকুয়া প্রতিনিধি:
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করছে এক স্কুল ছাত্র। জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারী সকাল ৯টায় চকরিয়া উপজেলার কোণাখালী ইউনিয়নের কোণাখালী সিকদার পাড়া নুর মোহাম্মদের বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কোণাখালী সেনঘোনা এলাকার মোকতার আহমদের মেয়ে ও কোনাখালী হেদায়তুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী হুরি জন্নাত বিলকিছ(১৫) ওই দিন সকালে মাদ্রাসার যাওয়ার পথে ওই স্থানে এসে পৌছলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা কোণাখালী খাতুরবাপের পাড়া ৩ নং ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের পুত্র ও মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৭ সালের এস এস সি পরীক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন(১৬) ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়।

মাদ্রাসা ছাত্রী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রতাখ্যান করলে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে অর্তিকিত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাম হাতের ক্পজিতে কুপ দিয়ে গুরুত্বর আঘাত করে আহত করে। এ সময় মাদ্রাসা ছাত্রীর রক্তাক্ত হয়ে যায় পুরো রাস্তা। পরে মাদ্রাসা ছাত্রীর সুচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে  মাদ্রাসা ছাত্রীর অবস্থা আরো অবনতি হলে আহত মাদ্রাসা ছাত্রী কে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রীকে আহত করার ঘটনায় এলাকায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার পরই স্থাণীয় গ্রাম পুলিশ ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর ঘাতক মিনহাজকে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে মোটাংকের বিনিময়ে ঘাতক মিনহাজ কে ছেড়ে দেয় ইউপি কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ছাত্রীর উপর এ ধরণের বর্রবরোচিত হামলার ঘটনা নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী আরো জানান ওই স্কুল ছাত্র মিনহাজের পরিবার এ ঘটনা দামাচাপা দিতে মোটাংকের মাধ্যমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে ম্যানেজ করে।

এলাকার সচেতনমহল জানিয়েছেন, বর্তমানে স্কুল মাদ্রাসায় ছাত্রীরা যাওয়া আসা নিরাপদ নাই। কিভাবে স্কুল মাদ্রাসায় তাদের মেয়েরা আসা যাওয়া করবে তা নিয়ে দূরচিন্তায় ভোগছেন অভিভাবকমহল। এদিকে তারা আরো জানান ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে মিনহাজ মাদ্রাসায় যাওয়া আসার সময় প্রায় সময় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। আবার অনেক সময় ওই ছাত্রীকে উত্ত্যপ্ত করত। ফলে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এ ঘটনা ঘটায়।

উল্লেখ যে, সম্প্রতি প্রেমের প্রস্তাবের বিষয় নিয়ে সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খদিজা কে প্রেমের প্রস্তাব দেয় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বদরুল। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় খদিজাকে মাটি ফেলে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। শেষ পর্যন্ত এ ঘটনায় খদিজা অনেক দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে একটু সুস্থ হয়।

এ ঘটনার রেশ কাটে উঠতে না উঠতে এবার সিলেট পেরিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোণাখালী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। একে একে বাংলাদেশে এ ধরণের বেশ কয়েকটি ঘটনা হলেও সব ঘটনার মুল হোতাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আর হুরি জন্নাত বিলকিছকে আঘাত করার ঘটনায় কি ঘটনার সাথে জড়িত ওই স্কুল ছাত্রের শাস্তি হবে না কি ?

এ ব্যাপারে মিনহাজের পিতা আবুল কাশেমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা জানান। তিনি আরো জানান ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর চিকিৎসা বাবদ ৫ হাজার টাকা দিয়েছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ওনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তাতে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও.শফিউল্লাহ ফারুকীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন আমি ওই দিন কক্সবাজারের প্রশিক্ষণে ছিলাম। আমার শিক্ষকরা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমিসহ শিক্ষকরা গিয়ে ছাত্রীকে দেখে হাসপাতালে ভর্তি করি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, আমি বিষয়টি শুনার পর ওই মিনহাজকে আটক করে স্থাণীয় মেম্বারকে জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই ছাত্রী সুস্থ হলে মিনহাজকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

Exit mobile version