parbattanews

ফাইনাল অডিশনে কিডস কেয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী আছমাউলের বাজিমাত

পুরস্কার হাতে আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন

আগুনে পুড়ে মারা গেছে তার বাবা-মা। পুড়ে গেছে দোলনায় থাকা তার ছোট ভাইও। পুড়েছে সে নিজেও। নাম তার আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন। অগ্নিকান্ডের ঘটনা রাজধানী ঢাকার মগবাজারে। সূত্রপাত পাশের বাড়ি থেকে তাদের ঘরে। অগ্নিদগ্ধ ছাবাত্বীনের মা-বাবার স্বপ্ন ছিল বড়। মেয়েটাকে বাবা বানাবে ডাক্তার আর মা বানাবে আদর্শ শিক্ষক। কিছুই হয়নি। স্বপ্নদ্রষ্টারাই পুড়েছে আগুনে। এতোক্ষণ পর্যন্ত এ সব কথাগুলো ছিলো প্রতিযোগি ছাবাত্বীনের অভিনয়ের মূল চরিত্রের অংশ বিশেষ। তার অভিনয়ে উপস্থিত দর্শকও কেঁদেছে। চোখের পানি গড়িয়েছে বিচারকেরও।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাজধানী ঢাকায় জহির রায়হান অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সেরাদের সেরা প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে। দেশব্যাপি জাতীয় এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন সমন্বিত সাংস্কৃতিক সংসদ (সসাস)। প্রতিযোগিতায় পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার নয়; পুরো চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন চকরিয়ার প্রতিভাবান মেয়ে আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন। পুরো অডিটরিয়াম একাই নীরব-নিস্তব্ধ করে রাখে “ক” বিভাগের প্রতিযোগি ছাবাত্বীন। অডিটরিয়াম ভর্তি বিপুল দর্শক যে যার মতো করে চোখের পানি ফেলেছে ছাবাত্বীনের অভিনয়ে। এই প্রতিযোগিতায় বিচারকও করেছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিচারকদের বিচারে জাতীয়ভাবে দ্বিতীয় রানার আপ নির্বাচিত হয়েছে সেই অভিনয়ের চরিত্রে আগুনে পুড়ে যাওয়া চকরিয়ার মেয়ে আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন।

কৃতি এই শিক্ষার্থী চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা তারেকুল ইসলাম চৌধুরী ও সিরাজ পাপড়ি রায়হান (সনেট) দম্পতির সুযোগ্য কন্যা। তাঁর গ্রামের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে।

জানা গেছে, জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা “সেরাদের সেরা” ‘ক’ বিভাগের একক অভিনয় প্রতিযোগীতায় জাতীয় পর্যায়ে ৩য় স্থান অধিকার করেছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৃতি শিক্ষার্থী আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন। আছমাউল চকরিয়া কিডস কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে অধ্যায়নরত এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রভাল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংসদের শিশু বিভাগের শিক্ষার্থী।

প্রতিযোগিতার শুরুতে কৃতি শিক্ষার্থী আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন মঞ্চ মাতিয়ে অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়েছে। একক অভিনয়ে চকরিয়া উপজেলা পর্যায় প্রথম, কক্সবাজার জেলা পর্যায় প্রথম ও পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় হয়।

এরপর গত ২০ জুলাই কুমিল্লা কেসিসিসি হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় সেমি ফাইনাল। এতে ইয়েস কার্ড পাওয়ার মধ্য দিয়ে ফাইনালে অংশ গ্রহণের সুযোগ লাভ করে। সর্বশেষ ৫ আগস্ট রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতার ফাইনাল অডিশন। এতে আছমাউল তাজনীন ছাবাত্বীন ৩য় স্থান অধিকার করেছে। আর জাতীয় পর্যায় তথা গ্রান্ড ফিনালের পথ উম্মুক্ত করে সেমি ফাইনালের ওই ইয়েস কার্ডই। ইয়েস কার্ডটি পেতে সাধনার পর সাধনা আর রপ্ত করেছে নানান কলা কৌশল।

এদিকে দেশসেরা পুরস্কার পাওয়ায় ছাবাত্বীনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রবাল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক শিল্পী মিনার উদ্দীন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন মহল অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তার সুস্থতা ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।

Exit mobile version