ফারুককে খুন করে চড় মারার প্রতিশোধ নেয় মৃদুল ত্রিপুরা!
খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার কালাডেবার বহুল আলোচিত ওমর ফারুকের(২৮) হত্যার ক্লু উদঘাটন ও খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চড় মারার প্রতিশোধ নিতেই একই এলাকার মৃদুল ত্রিপুরা(১৮) নামে এক তরুণ হত্যা করে ফারুককে।
খুন করার পর নিয়ে যাওয়া ফারুকের ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বদৌলতে হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও খুনের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া মৃদুলের কাছ থেকে নিহত ফারুকের ঐ স্মার্ট ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
শনিবার(১ আগস্ট) খাগড়াছড়ি আমলী আদলতের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতার হওয়া আসামী মৃদুল ত্রিপুরা।
মৃদুল রামগড় পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কালাডেবার উপেন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে। গত ১১ জুলাই রাতে বাড়ি ফেরার পথে খুন করা হয় ফারুককে। তিনি কালাডেবার বাসিন্দা আলী নেওয়াজের ছেলে এবং পেশায় একটি ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি।
পুত্রের খুনের ঘটনায় ১২ জুলাই আলী নেওয়াজ অজ্ঞাতনামা আসামি করে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলাা দায়ের করেন।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, খুন করার পর নিয়ে যাওয়া ফারুকের স্মার্ট ফোন অনুুসরণ করেই খুনিকে গ্রেফতার এবং হত্যার ক্লু উদঘাটন করা হয়।
তিনি জানান, আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি মৃৃদুল ত্রিপুরা বলেন, গত রমজান মাসে একদিন সে সন্ধ্যার পর কালাডেবার একটি রাস্তার পাশে পা মেলে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন।
এসময় ওমর ফারুক ওই পথ দিয়ে বাজারে আসার সময় বেখেয়ালে হঠাৎ মৃদুলের পায়ের সাথে লেগে হোঁচট খেয়ে পড়ে। এতে ফারুক রাাগান্বিত হয়ে মৃদুলকে গালাগাল করে। এক পর্যায়ে তার গালে সজোরে চড় মাড়ে ফারুক।
এই ঘটনায় মৃদুলের মনে ক্ষোভ জন্মায়। ১১ জুলাই রাতে ফারুককে কালডেবার বাজারে দেখার পর মৃদুল চড় মারার প্রতিশোধ নিতে ফারুকের বাড়ির রাাস্তার একটি স্থানে শক্ত কাঠের ছেলা নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে কাঁধে ছাতা নিয়ে মোবাইলের হেড ফোনে কথা বলতে বলতে ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় পিছন দিক থেকে এসে শক্ত কাঠের ছেলা দিয়ে ফারুকের মাথায় সজোরে আঘাত করে মৃদুল। এতে ফারুকের মাথা ফেটে যায়। সে মটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃদুল ফারুকের কাছ থেকে স্মার্ট ফোনটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
ওসি আরও জানান, ফারককে হত্যা করে তার স্মার্ট ফোনটি নিয়ে গিয়ে সাথে সাথে ফোনের সুইচ অফ করে রাখে সে। ওই দিন রাত ৪টা ৫৫ মিনিটে সুইচ অন করা হয়। কিছুক্ষণ পর আবার বন্ধ করা হয়।
১৩ জুলাই ওই সেটে নতুন সিমকার্ড লাগিয়ে ব্যবহার শুরু করে মৃদুল। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিয়মিত অনুসরণ করতে থাকে ওই ফোনটি। পুলিশ ওই ফোন ব্যবহারকারীর অবস্থানও নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার (৩১ জুলাই) গভীর রাতে ওসি শামছুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ।
কালাডেবা বাজার হতে পুলিশ আটক করে মৃদুল ত্রিপুরাকে। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নিহত ফরুকের স্মার্ট ফোনটি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সবকিছু স্বীকার করে মৃদুল।
শনিবার (১ আগস্ট) খাগড়াছড়ি আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের কাছে হাজির করার পর হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি মৃদুল ত্রিপুরা।