parbattanews

ফিরবে কি ব্র্যাঞ্জেলিনা, জোর জল্পনা হলিউডে

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

এক দশকের প্রেম। এক সঙ্গে লিভ ইন। একের পর এক সন্তান দত্তক নেওয়া। অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে তার পরে কাগজে কলমে বিয়ে। স্বপ্নের মতো এক যুগের একটা রূপকথা যেন। তার পর তারা সুখে শান্তিতে ঘরকন্নাও করতে থাকলেন।

কিন্তু না! হঠাৎ করে খেই হারাল সে রূপকথা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে চিড় ধরল পথ চলায়। হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় যুগল অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এবং ব্র্যাড পিট সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ-বিচ্ছেদের! সম্পর্কের আনাচাকানাচে বইতে শুরু করল তিক্ততার স্রোত। কখনও খোরপোষের পরিমাণ নিয়ে লড়াই। কখনও বা সন্তানদের অধিকারের প্রশ্ন নিয়ে তর্ক। কাদা ছোড়াছুড়ির খেলায় ভক্তকুলের মাথায় বাজ!

এমন করেই চলছিল। কিন্তু এত দিনের ‘রূপকথারা’ মিথ্যে হয়ে যাবে? প্রশ্নটা শুধু ভক্তকুলে নয়, বোধহয় কুরে কুরে খাচ্ছিল ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’কেও (দুই তারকা এ নামেই বেশি পরিচিত ফিল্মি দুনিয়ায়)। তাই সম্পর্কে দুম করে দাড়িটা টেনে দেওয়ার আগে ফের ভাবতে বসেছেন দু’জনেই। বিচ্ছেদ-প্রক্রিয়া যে তড়িৎ গতিতে এগনোর কথা ছিল, তা মোটেও হচ্ছে না— একটি মার্কিন বিনোদন পত্রিকার অন্তত তেমনটাই দাবি।

কাটার দাগ মিলিয়ে জটিলতাকে ‘সাদামাটা’ করার চেষ্টায় দু’জনেই উদগ্রীব বলে জানাচ্ছেন তারকা ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েক জন। ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’কে চেনা ছন্দে দেখতে পাওয়ার আশায় এখন বুক বাঁধছেন ভক্তরাও। এক ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’-ঘনিষ্ঠ ওই মার্কিন পত্রিকাকে বলেছেন, ‘‘সবারই এখন মনে হচ্ছে, ওরা দু’জন দু’জনের কাছে ফিরে আসবে। খুব অবাক হবো না ওরা যদি আর কিছু দিনের মধ্যে জানায়, বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে আসছি! অ্যাঞ্জেলিনা এখনও ব্র্যাডকে ভীষণ ভালবাসে।’’

উল্টো দিক থেকেও আসছে একই রকম খবর। ব্র্যা়ডও ‘মিসেস স্মিথ’-এর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য নিজেকে আপ্রাণ শোধরানোর চেষ্টা করছেন বলে শোনা যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ সূত্রে। গত বছর জুন মাসে ৪২ বছরের অভিনেত্রী ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের লস ফেলিজ এলাকার ১১ হাজার বর্গফুটের ম্যানসনে চলে গিয়েছিলেন। একটি পত্রিকাকে সাক্ষাৎকারে অ্যাঞ্জি বলেছিলেন, ‘‘পরিবারের ভালর জন্য যতটা করা যায়, সেই চেষ্টাই করছি।’’

এ ক’মাসের মধ্যে ব্র্যা়ড নিজের ভুল বুঝে খানিকটা নরম হয়েছেন। এক সূত্রের কথায়, ‘‘ধরে নিন ডিভোর্স হচ্ছে না। গত কয়েক মাসে এ ব্যাপারে ওরা এক পা-ও এগোয়নি। সমস্যা দূর করতে ব্র্যাড নিজেকে পাল্টাচ্ছে। জোলি তো শুধু এটুকুই চেয়েছিল।’’ অ্যাঞ্জেলিনাও সম্প্রতি এক জায়গায় বলেছেন, এখনও বাচ্চাদের জন্য তাঁরা দু’জনে যথেষ্ট ‘স্বাভাবিক’ থাকার চেষ্টা করছেন। তাই বাড়িঘর সামলানোর কাজটা ততটা তেতো লাগছে না!

একটা সময়ে ক্যানসারের আশঙ্কা দূর করতে নিজের শরীর থেকে স্তন-জরায়ু বাদ দেওয়ার মতো ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেননি যিনি, সেই তিনিই আবার অকপটে বলেছেন, বিচ্ছেদ পর্বটা জীবনের সব চেয়ে কঠিন অধ্যায় ছিল। শারীরিক অসুস্থতার সেই সঙ্কট-পর্বে প্রতি পদে পাশে ছিলেন ব্র্যাড। কিন্তু তার পরেও কোথায় কী ভাবে সুর কাটল, বোঝেননি অনেকেই। ব্র্যাডের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, অতিরিক্ত মদ্যপান— এ সবের দিকে আঙুল উঠেছিল তখনই। জোলির অভিযোগ ছিল, বাবার এমন আচরণের জন্য ছেলেমেয়েদেরও ক্ষতি হচ্ছে। সেটা সেই মুহূর্তে মানতে চাননি ব্র্যাড। শুরু হয়েছিল কথার লড়াই।

কিন্তু এখন সে সব অতীত। গত মে মাসে ব্র্যাড নিজেই মেনে নেন, অস্বাভাবিক মদ খাওয়াটা তাঁর একটা সমস্যা ছিল। এখন তিনি মদ ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজ ছেড়ে বেরনোর পরে একটা দিনও মনে পড়ে না, যে দিন মদ বা গাঁজা ছুঁইনি। বোধহয় ওগুলোয় শান্তি খুঁজতাম। অনুভূতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছিল। পরিবার তৈরি হওয়ার পরে তবু সব ছেড়ে দিয়েছিলাম। মদটা পারিনি। গত বছরও প্রচুর মদ খাচ্ছিলাম। ওটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।’’

ব্র্যাড বুঝেছেন, ‘‘গত কয়েক মাসে নিজের অনুভূতিগুলো ফিরে পেয়েছি। সেটা মানুষের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। হয় আপনি ওই অনুভূতি নিয়ে বাঁচবেন না হলে সেগুলোকে অস্বীকার করে চলে যাবেন।’’ ওই পত্রিকায় লেখা হয়েছে, মিস্টার স্মিথের এই ‘উপলব্ধি’র কথা তাঁর দীর্ঘদিনের সঙ্গিনীর কানেও পৌঁছেছে। আর হয়তো বেশি দিন নয়। ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’-র এক হয়ে হওয়ার সুখবর খুব শীঘ্রই পাঠকদের কাছে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে ওই পত্রিকা।

Exit mobile version