parbattanews

ফেনী নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের সম্মতি দেয়নি ভারত

সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর বাংলাদেশ অংশে বিভিন্ন স্থানে বিএসএফ’র বাধায় বন্ধ থাকা প্রায় একশ কোটি টাকার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করতে ভারতের সম্মতি পাওয়া যায়নি। ফলে মঙ্গলবার (১৪ জুন) ত্রিপুরার সাব্রুমে নিষ্ফল বৈঠক করে দেশে ফিরতে হল বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশল মো. রমজান আলী প্রামনিকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন। অপরপক্ষে, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) সাজু ওয়াহেদ ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। সাব্রুম নগর পঞ্চায়েত বাংলোতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় পৌনে ১২ টা হতে পৌনে ১টা পর্যন্ত এ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জানাযায়, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফেনী নদীর বাংলাদেশ অংশের বিভিন্ন স্থানে বিএসএফের বাধায় বন্ধ থাকা তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করতে ভারতের সম্মতির অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয় এক্ষুনি এ সম্মতি দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ভারতীয় দলের নেতা দক্ষিণ ত্রিপুরার ডিএম সাজু ওয়াহিদ এ বিষয়টি তাদের সরকারকে জানাবেন বলে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে জানান। এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন যুক্তি বা অনুরোধের মূল্যই দেয়নি ভারত। ফলে নিষ্ফল বৈঠক করে দেশে ফিরতে হয় প্রতিনিধিদলকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারত সীমান্তের ফেনী নদীর বাংলাদেশ অংশের খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও উত্তর ফটিকছড়ির ১৯টি স্থানে সিসি ব্লক স্থানের মাধ্যমে নদীর তীর সংরক্ষণের প্রকল্প নেয়া হয়। পানি উন্নয়ন র্বোড ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার এ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয়। এরই মধ্যে মাটিরাঙ্গা সীমান্তে ১০টি, রামগড় সীমান্তে ৫টি ও উত্তর ফটিকছড়ি সীমান্তের ৪টি প্রকল্প নেয়া হয়। ২০১৯ সালের আগষ্টে কাজ শুরুর কয়েক মাস পরই বন্ধ হয়ে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢিলেমীর কারণে প্রকল্প কাজের ঠিকাদার যথা সময়ে কাজ সমপ্ত করতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুরু করে ব্লকগুলো নদীর তীরে স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হলে বিএসএফ এতে বাধা দেয়। এনিয়ে ভারতের সম্মতির জন্য বাংলাদেশের তরফে বার বার অনুরোধ জানানো হলেও ফল আসেনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ বিষয়ে সাব্রুমে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও তীর সংরক্ষণ কাজের সম্মতি পেতে ভারতের কাছে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু বরাবরের মত এবারও তারা কাজের সম্মতি না দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। অপরদিকে, ফেনী নদী থেকে ভারত সমঝোতা স্মারকের ১ দশমিক ৮২ কিউসিক তুলে নেয়ার স্থান চূড়ান্ত এবং পানি নেয়ার পদ্ধতির বিষয়েও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বৈঠকে। এ ব্যাপারে বাংলদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় পক্ষকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ডিজাইন, ড্রয়িংসহ প্রকৌশলগত তথ্য দিতে বলা হয়।

এদিকে বৈঠকের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ-জামান খানকে মোবাইল ফোনে কল করে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কিছু না বলে কল কেটে দেন।

Exit mobile version