স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা দেশে বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অপারেশন ডেভিল হান্টে কোন দুষ্কৃতকারী যেন রেহাই না পায়।এ অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খোন্দকার মাহবুবুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির সকল ম্যাজিস্ট্রেট, সকল পাবলিক প্রসিকিউটর, ঢাকা ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সকল জোনাল উপ-পুলিশ কমিশনার ও সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোন অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে দেখতে চাই না। প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে চাই। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।তিনি বলেন, সকলেই নিশ্চিতভাবে জানেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।উপদেষ্টা বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে।তিনি বলেন, সরকারের পুলিশ বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনি প্রক্রিয়ায় এসকল অপরাধীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রেফতার করেছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পতিত ফ্যাসিবাদী এবং তাদের সহযোগীরা ১৬ বছরে অর্জিত অবৈধ সম্পদ ব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীসমূহের সমন্বয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে।তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে অভিযান সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কার্যক্রম তদারকি করা হবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে স্থাপিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার’ এর মাধ্যমে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে। মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ অভিযান পরিচালনায় সমন্বয় করবেন।তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। অপারেশন ডেভিল হান্টে কোন দুষ্কৃতকারী যেন রেহাই না পায়, পালাতে না পারে। আইনজীবীদের আমি বলবো আদালতে দায়েরকৃত প্রতিটি মামলার ধার্য তারিখ ও সময়ে উপস্থিত থাকুন। প্রসিকিউটিং এজেন্সির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ করে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ রাখুন। কোনভাবে যেন কোন সন্ত্রাসী জামিন না পায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে আইজিপির টিম মামলাভিত্তিক অগ্রগতি নিয়ে পাবলিক প্রসিকিউটরদের সঙ্গে ১৫ দিন পর পর বসতে পারেন।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসী, নরহত্যায় জড়িত বিশেষ হেলমেট বাহিনী, ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা, অর্থ পাচারকারী, লুণ্ঠনকারী, ষড়যন্ত্রকারী, দুষ্কৃতকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী, দুদকের মামলায় আসামিদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। তথ্যের সীমাবদ্ধতা কিংবা এজেন্সিগুলো ব্যর্থতার কারণে জামিন হয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়বে এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে একটি বিজ্ঞ বিচার বিভাগ, দক্ষ পুলিশ ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের আন্তঃসমন্বয় প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme/ar_framework/functions_custom.php on line 255