ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিতে একজনকে আগুন দিতে দেখা গেছে: ঢাবি প্রক্টর

fec-image

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি চারুকলার ছবিরহাট দিয়ে প্রবেশ করে মোটিফে আগুন দেয় বলে জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তি প্রথমে মোটিফগুলো যেখানে ছিলো সেখানকার পর্দার আড়ালে প্রবেশ করে মোটিফে লিকুইড দেন। তারপর আড়ালে এসে লাইটার জ্বালিয়ে ফায়ার টেস্ট করেন। পরে মোটিফে আগুন দিয়ে ছবিরহাট দিয়েই বেরিয়ে যান। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি কালো রঙয়ের টিশার্ট, ব্রাউন প্যান্ট ও পায়ে কালো রঙয়ের স্যান্ডেল পড়া ছিলো।

প্রক্টর বলেন, ভোর ৪টা ৫০ মিনিট থেকে ৫টা পর্যন্ত এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেসময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা নামাজে ছিলো। এসময়টাতে সবাই একটু ক্লান্ত থাকে। সেই সুযোগ কাজে লাগানো হয়েছে। আমার প্রক্টরিয়াল বডির একটি টিম ক্যাম্পাসে রাউন্ড দেয় তারা চারুকলার ভেতরে আগুন দেখে এবং দ্রুত সেখানে যায়। পুলিশ সদস্যরাও সেসময় চলে আসে।

তিনি আরও বলেন, এই মোটিফটা যাতে র‍্যালিতে না যায় সেজন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়েছে। পুলিশ তাদের মতো করে খোঁজ-খবর নিচ্ছে। এছাড়াও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি৷

চারুকলায় এখনো ফ্যাসিস্টের দোসররা রয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যেও এখনো ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর রয়েছে- শিক্ষার্থীদের এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, শিক্ষার্থীদের মন্তব্যকে একেবারে অমূলক বলার কোনো সুযোগ নাই। যারা এবিষয়ে আশঙ্কা করছেন তারা তদন্ত কমিটির কাছে তাদের বক্তব্য জানাবেন।

এদিকে ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি পোড়ানোর ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে ৫-সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল এবং সহকারী প্রক্টর ড. এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী। এছাড়াও সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল প্রাং কমিটির সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায়’ প্রদর্শনের জন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার মুখাবয়ব দিয়ে দানবীয় মোটিফ বানানো হয়েছিল। কিন্তু, শনিবার ভোররাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় মোটিফটিকে। এতে পুড়ে ভস্ম হয়ে যায় মোটিফটি। এর পাশাপাশি শান্তির পাওরাও অনেকাখানি পুড়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় ইতোমধ্যে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও এই মোটিফটি নতুন করে তৈরি করা হবে কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান চারুকলা অনুষদের ডিন ও নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ। তিনি বলেন, আজ বিকেলের মধ্যে মোটিফ বানানো হবে কিনা এই বিষয় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৫টা ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন