parbattanews

বনের কাঠ চুরি করে নৌকা তৈরি, প্রশাসন নিরব!

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বনের চোরাই কাঠ দিয়ে দেদারছে চলছে ফিশিং বোট তৈরীর হিড়িক। বনবিভাগের কোনো ধরণের অনুমতি ছাড়াই কতিপয় ব্যবসায়ীরা মাতামুহুরী নদীর চরে এ ফিশিং বোট তৈরীতে নেমেছে।

অভিযোগ রয়েছে, বোট তৈরীতে জড়িতদের সাথে বনকর্মীদের অলিখিত সমঝোতা রয়েছে। এ অবস্থার ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাতামুহুরী নদীর তীরে একাধিক পয়েন্টে ফিশিং বোট তৈরীর কাজ অব্যাহত থাকলেও তা বন্ধে বনকর্মীরা পালন করছে নীরব ভুমিকা।

পরিবেশ সচেতন মহলের অভিযোগ, অবৈধ ফিশিং বোট তৈরীতে দিব্যি গাছ ব্যবহার হওয়ার কারনে কক্সবাজার উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিন ও লামা বনবিভাগের সরকারী বনাঞ্চলের মুল্যবান বনজসম্পদ দিন দিন উজাড় হতে চলছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তীরে জেগে উঠা চরে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা বনাঞ্চলের মাদার ট্রি নিধন করে একাধিক ফিশিং বোট তৈরীর কাজ শুরু করেন। অন্য বছরের মতো চলতি বছরেও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বর্তমান মৌসুমে চলছে ফিশিং বোট তৈরী কার্যক্রম।

কাঠ ব্যবসায়ীরা জানান, ফিশিং বোট তৈরীতে ব্যবহার করা লম্বা আকৃতির গাছ মুলত সংগ্রহ করা হচ্ছে কক্সবাজার উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও লামা বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে। বনকর্মীদের ম্যানেজ করে কাঠ চোরাকারবারী চক্ররা রাতের আঁধারে এসব মাদার ট্রি কেটে পাচার করে জড়িত রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষেত্র বিশেষে বনকর্মীরা ম্যানেজ হলেও এসব ফিশিং বোট তৈরীতে বনবিভাগের কোনো ধরণের অনুমতি নেই। বনবিভাগের উর্ধবতন মহলকে শুধুমাত্র বুঝানোর জন্য কতিপয় ব্যবসায়ীরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিপির কাঠ দিয়ে ফিশিং বোট তৈরী করা হয় বলে অজুহাত দেখানো হচ্ছে। দেখা গেছে, বর্তমানে উপজেলার নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বড় বড় মাদার ট্রি কেটে বেতুয়াবাজার, বদরখালী, কৈয়ারবিল, বাটাখালী, তরছঘাট এলাকায় ফিশিং বোট তৈরীতে ব্যবহার করছেন আরো অনেকে জায়গা। যার মধ্যে উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের বাজারের পশ্চিম পাশে বোট তৈরি করছে মাসুম সওদাগর, বাটাখালীস্থ মাতামুহুরী নদীর তীরে জাফর আলম, তরছঘাট এলাকায় আক্কাস সওদাগর, হাজিয়ান এলাকার নুরুল হক মেম্বার, কৈয়ারবিল ডিগকূল এলাকার জয়নাল আবেদীন ও হামিদ চৌধুরী এ ফিশিং বোট তৈরী করছেন।

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, মাতামুহুরী নদীর তীরে ফিশিং বোট তৈরীর জন্য কেউ বনবিভাগ থেকে অনুমতি নেয়নি। তিনি আরও বলেন, মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে যেসব ফিশিং বোট তৈরী করা হচ্ছে সবই অবৈধ। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেন বলেন, বোট তৈরীর স্থানে বনবিভাগের লোকজন পাঠানো হবে। অবৈধভাবে কেউ বোট তৈরী করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version