“এলজিইডি’র অফিসের দেয়া তথ্যমতে ১৮টি রাস্তার ২০.৮৯ কিলোমিটার সড়ক, কালভার্ট ও ব্রিজ ভেঙ্গে গিয়ে অন্তত ৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি ”
চকরিয়ায়

বন্যায় লণ্ডভণ্ড এলজিইডির ১৮টি সড়ক, ক্ষয়ক্ষতি ৭ কোটি টাকা

fec-image

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক নির্মানাধীন কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অভ্যন্তরীণ সড়ক ও উপ-সড়কে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে বছর শেষ হতে না হতেই সড়ক গুলো ভেঙ্গে খানা-খন্দকে ভরপুর ও লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। চকরিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বানের পানিতে এসব সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থ্যা ভেঙ্গে পড়েছে। এলজিইডি’র অফিসের দেয়া তথ্যমতে ১৮টি রাস্তার ২০.৮৯ কিলোমিটার সড়ক, কালভার্ট ও ব্রিজ ভেঙ্গে গিয়ে অন্তত ৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করে জানায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা রিক্সা ও সিএনজি নিয়ে যাত্রীরা চলাচল করতে চরম ভাবে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে অভ্যান্তরীণ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের দূর্ভোগ চরম আকারে ধারণ করেছে। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদাররা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এসব রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করায় এক বছরও স্থায়ী হয়নি বলে তারা দাবি করেছেন।

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস কর্তৃক তথ্যমতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা গুলো হলো, কাকারা ইউপি অফিস-মাঝের ফাঁড়ি বাজার রাস্তা, কাকারা শাহ ওমর আরএইচডি প্রপার কাকারা ইউএনআর রাস্তা, কৃঞ্চকাটা রাস্তা, বেতুয়া বাজার আরএইচবি-খিলছাদক বরইতলী বিবিরখিল রাস্তা, বদরখালী ইউপি অফিস, দক্ষিণ মাথা ফিসারী ঘাট সড়ক, মাঝের ফাঁড়ি থ্রি মাথা দক্ষিণ কাকারা জিপিএস সড়ক, কাকরা মিনি বাজার তাজুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা- হাজি ইলিয়াছ বাড়ি সড়ক, মাঝের ফাঁড়ি ব্রীজ সুরাজপুর ফরেস্ট অফিস সড়ক, লক্ষ্যারচর আরএইচবি সড়ক-শাহ ওমরাবাদ হাই স্কুল পৌরসভা সংয়োগ সড়ক, মাঝের ফাঁড়ি ব্রীজ কাটাখালী হাট সড়ক, বরইতলী মধ্যম সড়ক, পহরচাঁদা সিকদারপাড়া গোবিন্দপুর সড়ক, একতাবাজার-পুক্কাইয়া ঝিরি লামা সংয়োগ সড়ক, বরইতলী পহরচাঁদা আরএইচবি-মছনিয়াকাট আরএইচবি সড়ক, ডিঙ্গাকাটা সড়ক, বিএমচর দরগা পাহাড়, কৃষ্ণাপুর আরএনডিপিএস সড়ক, বিএমচর দরগা মুরা কান্ন্যারকুম বেঁড়িবাধ সড়ক, বিএমচর ইউপি অফিস হতে পানির নাল জকরিয়া সংয়োগ সড়ক।

ভুক্তভোগীরা জানান, জনগণ বন্যার কবল থেকে রাস্তাঘাট ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণে এলজিইডি’র প্রযুক্তি ব্যবহারে দূর্বলতাকে দায়ী করেছে। বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য টেকসই রাস্তাঘাট নির্মাণ করলে সরকারের কোটি কোটি টাকা প্রতিবছর অপচয় থেকে রক্ষা পাবে। সচেতন মহল দাবি করেন, বিটুমিন কার্পেটিং রাস্তায় বন্যার পানি জমে থাকার কারণে রাস্তা গুলো ভেঙ্গে ও শত শত খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়। এ জন্য ভবিষ্যতে টেকসই আরসিসি ঢালাইয়ের রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্মকর্তা কমল কান্তি পাল জানান, বন্যায় যে সমস্ত ছোট ছোট এলজিইডি রাস্তা গুলো ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ওইসব রাস্তা ইউপির মাধ্যমে সংস্কার করার জন্য উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাকারাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত কার্পেটিংয়ের রাস্তা, কালভার্ট সমূহ এলজিইডি কর্তৃক বরাদ্দ হাতে পেলেই তা দ্রুত সংস্কার করা হবে। বন্যায় এলজিইডি বিভাগের কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার একটি বিবরণ তৈরি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বিবরণ নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা করা হয়। যে সব রাস্তা-ঘাট চলাচলের অনুপযোগী রয়েছে তা স্ব স্ব পরিষদের চেয়ারম্যান মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। রাস্তার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিভাগকে জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চকরিয়ায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, সড়ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন