parbattanews

বর্ণিল আয়োজনে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে পার্বত্য শান্তিচুক্তির রজতজয়ন্তী

বর্ণিল আয়োজনে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির রজত জয়ন্তী তথা ২৫ বর্ষপূর্তি।

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার শুভ উদ্বোধন করেন ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর অংশগ্রহণের র‌্যালিটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বর হয়ে টাউন হল প্রাঙ্গণে এসে চেতনা মে’র বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বর্ণিল ডিসপ্লে সবাইকে মুগ্ধ করে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, ডিজিএফআইয়ের ডেট কমান্ডার কর্নেল সরদার ইসতিয়াক আহমেদ, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক, জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, নিলোৎপল খীসা, পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, শুভ মঙ্গল চাকমা, হিরনজয় ত্রিপুরা, খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের সদস্য শতরূপা চাকমা, জেলা সিভিল সার্জন মো. ছাবের, বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির সময়, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ. সাইফুল্লাহ, জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তারা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির রজতজয়ন্তী তথা ২৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিকাল ৩টায় অস্ত্র সমর্পণের স্থান খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে হবে সম্প্রীতি কনসার্ট । কনসার্টে সংগীত পরিবেশন কববেন ফোক সম্রাজ্ঞি মমতাজ বেগম এমপি। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করবেন, হৃদয় খান, নাজমা সুইটি, প্রতীম, অরণ্য ব্যান্ড ও হিল স্টার মিউজিক্যাল গ্রুপ। এ কনসার্ট সকলের জন্য উম্মুক্ত থাকবে। এছাড়াও একই স্থানে সন্ধ্যায় থাকবেন প্রদীপ প্রজ্জলন, আতশবাজি ও ফানুস উড়ানো।

প্রসঙ্গত, পাহাড়ে প্রায় দুই দশকের সংঘাত বন্ধে ১৯৯৭ সালের এই দিনে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির স্বাক্ষরের ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ১০ ফ্রেরুয়ারি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হাতে গেরিলা নেতা সন্তু লারমার অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এর পর কেটে গেছে ২৪ বছর।

চুক্তির অধিকাংশ ধারাই বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকি ধারাও বাস্তবায়িত হবার পথেও। তাও পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড়িদের ৬টি সশস্ত্র সংগঠনের লড়াইয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে পাহাড় । এসব সংগঠনের অপতৎপরতায় পাহাড়ের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা সবকিছু ধূলিস্যাতে অস্থির হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। হত্যা, গুম, খুন, অপহরণ, গোলাগুলির মত ঘটনায় আরো শঙ্কিত পাহাড়ের সাধারণ মানুষ।

চুক্তির পর গত ২৪ বছরে ৬টি পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপ নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৮শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী এবং সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়াও এদের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সংঘাত সহিংসতা মাঝে-মধ্যে পাহাড়ের সম্প্রতির উপরও আঘাত হানছে। উন্নয়নের গতি বাড়াতে ৬ সশস্ত্র সংগঠন নিষিদ্ধসহ চাঁদাবাজি বন্ধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি সকল মহলের।

Exit mobile version