সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদ

বর্ষায় খুড়ে খুড়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে সড়ক

fec-image

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সুয়ালক- লামা সড়কটি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই সড়কটিতে চলছে ছোটবড় বিভিন্ন যানবাহন। উপজেলার লামা যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসাবে চলাচল করে আসছে।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মোটর বাইক, সিএন্ডজি, ট্রাকসহ বিভিন্ন চলাচল করলেও বর্ষায় মৌসুম এলে খুড়ে খুড়ে ভেঙ্গে যায় সড়কটি। দূর্ঘটনা ঠেকাতে সড়কটি মেরামত করার দূরের কথা যেন চোখেই দেখেন না এলজিইডি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষরা। ফলে এই সড়ক দিয়ে চলাচলাকারী যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সুয়ালক থেকে ৩১ কিলোমিটার দুরত্বে টংকাবতী ইউনিয়নের সামনে সড়কটি ভাঙ্গনের চিত্র। সড়ক কার্পেটিং করা হলেও মাত্র তিন বছরের মাথায় ভেঙ্গে গেছে। প্রতি বর্ষায় মৌসুম এলে পাহাড়ি পানির ঢলে ধ্বসে যাচ্ছে সড়কটি।

ফলে সেই সড়কের চলাচলকারীদের প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় শিকার হতে হয়। প্রায় তিন বছর ধরে সড়কটির কোন সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কের এমন বেহাল দশায় ফলে এখন মরণ ফাঁদে রূপ নিয়েছে সড়কটি। তাছাড়া ভাঙা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ অংশের ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপারের সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন ওই সড়কের চলাচলকারীরা।

জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ সালে সুয়ালক- লামা সড়কটি বাস্তবায়ন করেছিল বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর এলজিইডি। বাস্তবায়ন পর নেয়া হয়নি কোন পরিচর্যা কিংবা সংস্কারের মেরামত। ২০২৩ সালে টানা ভারী বর্ষাতে ধ্বসে যায় সড়কটি। এরপর থেকে কোন মতে যানচলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে সংস্কার করা হলেও প্রতি বর্ষা মৌসুম এলে খুড়ে খুড়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে সেই সড়কটি।

স্থানীয়রা জানান, লামা- সুয়ালক সড়কের দুই বছর আগে কোটি টাকার বিনিময়ে কার্পেটিং সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু সড়ক পাকাকরণের তিন বছর না যেতেই এমন বেহাল অবস্থা। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ডেবে যাচ্ছে সড়কটি। একাধিকবা সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি কতৃপক্ষরা। ফলে এই সড়কটি ধ্বসে গেলে যেকোন সময় বন্ধ হয়ে আবে সুয়ালক- লামা সড়কের যাতায়াত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের দেড় কিলো পর সড়কটি ধ্বসে গেছে। ভারী বর্ষনের কারণে মাটি খুড়ে খুড়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে পুরো সড়ক। ফলে বিপাকে পড়েছে সেই সড়কে চলাচলকারীরা। একাধিকবার সংস্কারে বিষয়ে স্থানীয়, জনপ্রতিধিরা এলজিইডি সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নেননি। তাছাড়া কোটি টাকা সড়কের তিনবছর মাথায় কিভাবে ধ্বসে গেছে সেটি বিষয় ক্ষুদ্ধ ওয়ি এলাকার বাসিন্দারা।

টংকাবতী এলাকার বাসিন্দা তঙ্গয়ে ম্রো ও ট্রাক জসিম বলেন, আমরা প্রতিদিন বিপদের মধ্য দিয়েও গাড়ী চালাচল করে থাকি। কখন যে দূর্ঘটনা হয় সে ব্যাপারে আমরা আতঙ্কে নিয়ে চলাচল করছি। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষরা বিষয়টি যদি দ্রুত কাজ করে তাহলে ভালো হবে । আর কাজ করা না হলে এই বর্ষাতে পুরো রাস্তা ভেঙ্গে একেবারে দু ফিট নিচে চলে যাবে এবং গাড়ী চলাচল ও সড়ক বন্ধ হয়ে যাবে।

টংকাবতি চেয়ারম্যান মায়াং ম্রো জানান, গত বছর থেকে রাস্তাটি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এটা আকার অনেক বড় হয়ে গেছে। গতবছর এলজিইডি নির্বাহী অফিস ও সদর উপজেলা অফিসে বলার পরও কোন কাজ হয়নি। এখন আবার বর্ষায় শুরু হয়েছে যে কোন মুহুর্তে সড়কটি ভেঙ্গে যেতে পারে।

জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর বলেন, এ রাস্তার বিষয়ে আমি জানি না । তবে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি সাথে সাথে সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। দুদিনের মধ্যে রাস্তাটি দেখে যেখানে যেখানে সংস্কার করতে হবে সেটি দেখে এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ের থেকে বরাদ্ধ চাইবো এবং দ্রুতভাবে মেরামত কাজটি করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বান্দরবান, লামা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন