রামগড় একাডেমিক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বসের স্বাক্ষর জাল করে ৭৩ হাজার টাকার বেতন-বিল উত্তোলন

fec-image

কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে বেতন আটকানোয় নিজেই বসের স্বাক্ষর জাল করে বেতন-বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষর জালিয়াতির জন্য একাডেমিক সুপারভাইজার কাজী সোহেল রানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগের সত্যত্যা নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রামগড় উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কাজী সোহেল রানা অধিকাংশ সময় কর্মস্থলে থাকেন না। এ অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির তার জুলাই ও আগস্ট’২৪ মাসের বেতন-বিল আটকিয়ে দেন। বেতন-বিল পাস না করার কারণে একাডেমিক সুপারভাইজার নিজে ওই কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে দুইমাসের ৭৩ হাজার ৪০০ টাকার বেতন-বিল জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, একাডেমিক সুপারভাইজার কাজী সোহেল রানা গত ৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি এসে জুলাই ও আগস্ট’২৪ দুই মাসের বেতন-বিলের কাগজে তার স্বাক্ষর চায়। কিন্তু কর্মস্থলে অনুমোদিতভাবে লাগাতার অনুপস্থিতির কারণে তিনি বিলে স্বাক্ষর দেননি। এর ৪-৫দিন পরে রামগড় অফিসের এক কর্মচারির কাছ থেকে একাডেমিক সুপারভাইজার বেতন-বিল তুলে নেওয়ার কথা শুনে তিনি সোহেল রানাকে ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কল কেটে দেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরো জানান, গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রামগড়ে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস ও সোনালী ব্যাংকে গিয়ে বেতন-বিলের কাগজ পরীক্ষার করে তিনি নিশ্চিত হন একাডেমিক সুপারভাইজার তার স্বাক্ষর জাল করে বিলের টাকা উত্তোলন করেন। তিনি বিষয়টি খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) অবহিত করেছেন বলেও জানান।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন বলেন, একাডেমিক সুপারভাইজার স্বাক্ষর জাল করে বেতন-বিল উত্তোলনের বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাকেও জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠাবেন বলেও জানান।

এদিকে, স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করে একাডেমিক সুপারভাইজার কাজী সোহেল রানা ফোনে বলেন, ‘ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেতন-বিলে প্রথমে স্বাক্ষর দিতে রাজী হননি, পরে চাপ দিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রামগড় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়ার পর বার্ষিক আনুসাঙ্গিক বরাদ্দ হতে ১০ হাজার টাকা চান। গত জুলাইয়ে তিনি ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তার দাবীর বাকী ৫ হাজার টাকা না দেওয়ায় তিনি তার বেতন-বিলে স্বাক্ষর দিতে চাননি।

তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবির একাডেমিক সুপারভাইজারের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন