parbattanews

বাঁকখালী নদী: উৎস ভূমিতে তুমি কার?

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের জিরো পয়েন্টের ভূচি পাহাড়ের নিকটবর্তী এলাকা থেকে সৃষ্ট হয়েছে বাকঁখালী নদী। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ভায়া রামুর উপর দিয়ে নদীটি বঙ্গপসাগরে গিয়ে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে নদীটি নাইক্ষ্যংছড়ি উৎস পথে গতিপথ হারাচ্ছে। নদীর দু’পাড় দখল করে তামাক চাষ হচ্ছে। আর এই চাষের কিটনাশকের কারণে ক্ষতি হচ্ছে মৎস্য সম্পদ, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র। রামুর কচ্ছপিয়া-গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি সীমানা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দেশের পূর্ব সীমান্ত পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ভূচি পাহাড় থেকে উৎসারিত বাকঁখালী নদী কক্সবাজার বুক চিরে বঙ্গোপসাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু সীমান্তের এই গুরুত্বপূর্ণ নদীর নাম বান্দরবান জেলার কোথাও উল্লেখ নেই। সম্প্রতি নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের এক আলোচনায় বাকঁখালী নদীর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর অক্টোবরে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দোছড়ি ইউনিয়নের লেদুরমুখ এলাকা পরির্দশন করেছেন।

এই ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, বাকঁখালী নদীর উৎপত্তিস্থল নির্ধারণের জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের একটি টিম দোছড়ি এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তবে উপজেলা প্রশাসন এই নিয়ে আলাদা কোন কাজ করছে না।

জানা গেছে, বাকঁখালী এই নদী প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। নদীর মোহনা থেকে ৬০ কি.মি. উত্তরে মাতামুহুরী মোহনা। প্রায় ১৪ কিলোমিটার বয়ে গেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ের কোলঘেষে। এসব পাহাড়ের ঢলে বর্তমানে নদীটি মৃতপ্রায়। পাহাড়ী ঢলে ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর দুই পাড়ে দখলদাররা তামাক চাষ শুরু করেছে। যার কারণে নদীটি সরু হয়ে বর্ষা মৌসুমে ঘন ঘন বন্যায় কবলিত হচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ি ও আশপাশের এলাকা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরান জানান, বাকঁখালী নদীটির উৎপত্তি হয়েছে দোছড়ি-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে পাহাড়ে পাথর উত্তোলন, বন ধ্বংসসহ নদীর দুই পাড়ে তামাক চাষের কারণে বাকঁখালী নদী প্রাণ হারাচ্ছে। এছাড়া বাকঁখালী নদীটি বান্দরবানের নদী তালিকায় যুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

নদী বিশেষজ্ঞ ড. মো, মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, বৃহত্তর চট্টগ্রামের পরিবেশ ও মানুষ টিকে থাকার জন্য নদীগুলো গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যথাযথ সচেতনতার অভাবে এই নদীগুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

Exit mobile version