parbattanews

বাংলা না জানায় চাকমা রোগীকে চিকিৎসকের অপমান

বাংলা ভাষা না জানায় চিকিৎসা নিতে যাওয়া চাকমা রোগী ও তার স্বজনকে অপমান করা চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার চার দিন পর সোমবার (০৮ এপ্রিল)তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নূরুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীসহ অংশ নেন চিকিৎসকের কাছে অপমানিত হওয়া রোগীর ছেলে এলিন চাকমা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দ্রুত অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের এই মানববন্ধনে সংহতি জানান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম বিভাগের ডেপুটি গভর্নর মো. আমিনুল হক বাবু। চবি শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ ত্রিপুরার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পাইউ মারমা, সন্টু চাকমা, নয়ন ত্রিপুরা, দন কিশোর ত্রিপুরা প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘চিকিৎসকের মতো শিক্ষিত ব্যক্তি যদি এ ধরনের আচরণ করেন তবে আমরা কোথায় যাব? তার এমন আচরণ আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে চিকিৎসক ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের অবমাননা করেছেন। এমন অপরাধের শাস্তি তাকে পেতে হবে। চিকিৎসককে ক্ষমাও চাইতে হবে।’

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে অপমানের শিকার হওয়া রোগী তরুণ কান্তি চাকমার ছেলে এলিন চাকমা বলেন, ‘পুরোপুরি অন্যায়ভাবে চিকিৎসক আমার বাবাকে অপমান করেছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যে মাতৃভাষা পেয়েছি চিকিৎসক তাকে অবমাননা করেছেন। আমি দোষী চিকিৎসকের শাস্তি চাই, তার বিচার হোক। আমি চাই না চিকিৎসা নিতে গিয়ে আর কেউ আমার বাবা ও আমার মতো অপমানের শিকার হোক।’

আমিনুল হক বাবু বলেন, ‘মানুষের দুঃসময়ে পাশে থাকেন চিকিৎসক। এই চিকিৎসকের কাছ থেকে আমরা সবসময় মানবিক আচরণ আশা করি। যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে আমি আপনাদের মতো সমব্যাথিত। এটি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। একজন চিকিৎসকের ভুলের কারণে পুরো হাসপাতালের সুনাম কর্তৃপক্ষ নষ্ট হতে দেবে না বলে বিশ্বাস আমার।’

গত ৪ এপ্রিল চিকিৎসা নিতে গিয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক গ্যাস্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মোসলেহ উদ্দিন শাহেদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হন রোগী তরুণ কান্তি চাকমা ও তার ছেলে এলিন চাকমা।

Exit mobile version