parbattanews

বাইশারীতে লাইসেন্স বিহীন চারটি করাত কল গিলে খাচ্ছে বনাঞ্চল

11

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বন ভূমি এবং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন এলাকার অন্তত ২’শ মিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপনে সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে তা মানা হচ্ছে না। বিভিন্ন বসতী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বনায়নের নিকটেই গড়ে উঠেছে লাইসেন্স বিহীন চারটি করাত কল।

পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় স্থিত সামাজিক ও সংরক্ষিত বনায়ন এবং বাইশারী ইউনিয়নের বিভিন্ন বনায়ন থেকে চোরাই পথে আনা বিভিন্ন বয়সের গাছ অবাধে চেড়াই ও বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সরকার রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দিকে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও করাতকলের উপর আরোপিত নীতিমালা সঠিক ভাবে প্রয়োগ না করার কারণে এক দিকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে আর অন্য দিকে করাতকল মালিকরা যে কোন বয়সের গাছ কেটে বন উজাড় করছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাইশারী সদরের খুব নিকটেই চারটি করাত কল গড়ে তোলা হয়েছে। এসব করাত কলের মালিকরা হচ্ছে ঈদগাও এলাকার জনৈক নাছির উদ্দিন কোং, মধ্যম বাইশারী এলাকার ফারুক আহমদ, ধাবনখালী পাড়ার উছাথোয়াই চাক ও ধুংচাই মার্মা। প্রতিটি করাত কলে বিপুল সংখ্যক কাঠ মজুদ রয়েছে। সরকারী নিয়মে সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত করাত কল চালানোর নিয়ম থাকলেও অবৈধ করাতকলের মালিকরা তা মানছেনা। রাতদিন চলছে কাঠ চিরাই। চোরাকারবারীরা বনায়ন এলাকা থেকে চুরি করা গাছ নিরাপদ স্থান হিসেবে এসব করাত কল ব্যবহার করছে। এদিকে প্রতিটি করাত কল কেন্দ্রিক জমজমাট জুয়ার আসর বসছে প্রতিদিন। লাখ লাখ টাকার খেলা হচ্ছে সেখানে। মাঝে মধ্যে জুয়ার আসরের আশ-পাশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরও ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়।

বনায়ন রক্ষায় বাইশারীতে সাঙ্গু বন বিট থাকা সত্বেও কোন কার্যক্রম তাদের নেই বললে চলে। বন বিভাগ বন আইনের প্রয়োগ না করে বিশেষ কারণে করাত কল মালিক ও অসাধু কাঠ চোরাকারবারীদের সহায়তা করে চলছে এমনটি অভিযোগ স্থানীয় পরিবেশবাদী মহলের।

বন বিভাগের মাধ্যমে এলাকার ভিতরে বাইরে কাঠ ও অন্যান্য বনজদ্রব্য পরিবহণের সময় জাত, মাপ, মার্কা, সংখ্যা, পরিমাণসহ পরিবাহিত বনজদ্রব্যের বৈধতা যাচাই করা হয় দাবী করা হলেও অবৈধ লেনদেনের কাছে সবই মাফ পেয়ে যায়। তবে মাঝে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি কাঠ পাচার রোধে ভূমিকা রেখে চলছে।

অবৈধ করাত কলের বিষয়ে জানতে চাইলে সাঙ্গু বন রেঞ্জে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা. এ এসএম হারুন জানান, বাইশারীর চারটি করাত কলের মধ্যে কারও লাইসেন্স নেই। দেড় মাস পূর্বে দুই জন আবেদন করেছে।

Exit mobile version